তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে কালো ধান

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান চাষ হচ্ছে। এ ধান চাষ করেছেন তিরনইহাট ইউপির ইসলামবাগ এলাকার তরুণ কৃষক সাদেকুল ইসলাম সুষম। সে ওই গ্রামের ফেরদৌস কামালের ছেলে।

ঢাকা কলেজ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর করে বর্তমানে বাবার জমির দেখাশোনা ও চাষাবাদ করছেন। ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে ঢাকার গাজীপুর থেকে এ কালো ধানের বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। ফলন ভাল এবং দামি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরাও এ ধান চাষের উদ্যোগ নিচ্ছেন।

কালো ধান চাষ সম্পর্কে সাদেকুল ইসলাম সুষম বলেন, করোনাকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে নিজেদের ৬০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক ব্ল্যাক রাইস প্রজাতির ধানের চাষ করি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষে এই ধান রোপণ কই। মাত্র তিন মাসের মধ্যে প্রত্যেক গাছেই প্রচুর পরিমাণে ফলন ধরেছে। কিছুদিনের মধ্যেই মাড়াই শুরু হবে। ধানগুলো দেখতে যেমন কালো, চালও দেখতে তেমন কালো।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১০ প্রকারের কালো ধান চাষ হয়। তবে আমি তিন প্রকারের ধান চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় ১৬/১৭ মণ ধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ধানের প্রত্যাশিত মূল্য ও চাহিদা হলে সামনের বছরে ব্ল্যাক রাইসের চাষ আরও বৃদ্ধি করবো। কেননা, এ ধান চাষে অতিরিক্ত ঝুঁকি এবং খরচ নেই। এটি সাধারণ ধানের মত চাষ হলেও অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না। আলাদা পরিচর্যারও প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য ধান থেকে এই ধান আলাদা হওয়ায় এর দাম বেশি।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, এ ধান সম্পর্কে আমরা জানতাম না। তবে শুনেছিলাম। ইসলামবাগ এলাকায় কালো ধান আবাদ হচ্ছে, আমরা এর চাষাবাদ ও উৎপাদন সম্পর্কে জেনেছি সুষমের নিকট থেকে। সে এলাকার সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। এ কালো ধান দেখতে প্রতিদিন দর্শনার্থী ভিড় করছেন। ফলন ভাল হয়েছে, ধানটি দাম মিললে আমরাও এ ধান চাষের উদ্যোগ নেব।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ব্ল্যাক রাইস রাইস তথা কালো ধান তেঁতুলিয়া এলাকার জন্য প্রথম। ধানটি কালো চাল জাতীয় বিশেষ ধরনের প্রজাতি। চালের রঙ গাঢ় কালো হয়ে থাকে এবং সিদ্ধ হয়ে গেলে সাধারণত গাড় বেগুনি হয়ে যায়। এটাতে অ্যান্থোসায়ানিন উপাদান থাকায় যা অন্যান্য রঙের চালের তুলনায় ওজনে বেশি। আর উপকারিতা রয়েছে। ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা রোগের উপকারিতা সমৃদ্ধ। যার কারণে ব্ল্যাক রাইসকে বর্তমানে পৃথিবীর নতুন সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এ চালের বাজার মূল্য অনেক বেশি। ফলে ব্ল্যাক রাইস আবাদে কৃষক বেশি লাভবান হতে পারে। এ ধানের চাল বেশি করে উৎপাদন করতে পারলে তা কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।