নূন্যতম কর কমছে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের

আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেটে ন্যূনতম আয়কর হার কমানো হতে পারে পাইকারি ব্যবসায়ী, পণ্য পরিবেশক, ব্যক্তি মালিকানাধীন (প্রোপ্রাইটারশিপ) প্রতিষ্ঠানগুলুতে। কিন্তু মোবাইল অপারেটর, সিগারেট, বিড়ি, চুষে খাওয়ার তামাক, ধোঁয়াবিহীন তামাক বা অন্য সব তামাক প্রস্তুতকারক কোম্পানির ন্যূনতম কর অপরিবর্তিত থাকবে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম কর হার শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করা হতে পারে। বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে।

ন্যূনতম কর কমানো হলে এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের একটি অংশ ন্যূনতম করকে আয়কর অধ্যাদেশের মূলনীতির পরিপন্থী উল্লেখ করে তা পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।ব্যবসায় লাভ বা লোকসান যাই হোক ন্যূনতম কর দিতেই হয়। ফলে ছোট ব্যবসায়ীদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। করোনা মহামারির এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখতে ন্যূনতম কর প্রত্যাহার করা উচিত।

আয়কর কর্মকর্তারা বলছেন, নূন্যতম কর আরোপ না করলে লাভ হওয়ার পরও অনেক ব্যবসায়ী লোকসান দেখিয়ে আয়কর দিতে চান না। এছাড়া যারা আয়কর দেন তারা আয় কম দেখিয়ে নামমাত্র কর দেন। এ কারণে করযোগ্য ব্যবসায়ীদের কর দিতে বাধ্য করার জন্য আয়কর অধ্যাদেশে ন্যূনতম কর যুক্ত করা হয়েছে।

কর রেয়াত পাবে যেসব খাত
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার, স্টক, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চার ক্রয়, জীবন বীমার প্রিমিয়াম, সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ভবিষ্যৎ তহবিলের চাঁদা, স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাঁদা, কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠীবীমার তহবিলে চাঁদা, সরকার অনুমোদিত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ, বার্ষিক সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার এফডিআর এবং সুপার অ্যানুয়েশন ফান্ডে চাঁদা।

মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের ক্ষেত্রে
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাঁচামাল এবং বেতন-ভাতা ব্যতীত অন্য ব্যয়ের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে ক্রস চেক বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে করার বিধান রয়েছে। ক্রস চেক বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে দায় পরিশোধ করা না হলে সেই খরচকে অনুমোদনযোগ্য খরচ হিসেবে বিবেচনা নেয়া হয় না। অর্থাৎ ওই খরচকে আয় হিসেবে গণ্য করে আয়কর আদায় করা হয়।

আগামী বাজেটে ক্রস চেক বা ব্যাংক ট্রান্সফারের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসকে যুক্ত করা হতে পারে। শুধু তাই নয়, আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী যেসব ক্ষেত্রে ব্যাংক ট্রান্সফারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে ব্যাংক ট্রান্সফারের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসকে যুক্ত করা হতে পারে।

এটি করা হলে একজন ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার এক কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগকে রেয়াতযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হবে। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রসহ ৯ খাতে বিনিয়োগ এবং ১৩ খাতে দান করলে কর রেয়াত পাওয়া যায়। এসব খাতে একজন করদাতা তার মোট বার্ষিক আয়ের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ বা দান রেয়াতযোগ্য। এর বেশি বিনিয়োগ বা দান করলে অতিরিক্ত অংশের জন্য রেয়াত পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে মোট বিনিয়োগ ও দানের ১৫ শতাংশ কর ছাড় মিলবে। বার্ষিক আয় ১৫ লাখ টাকার বেশি হলে ১০ শতাংশ হারে কর ছাড় পাওয়া যাবে।