ইমিগ্রেশনে সার্ভার জটিলতা, অপরাধীদের দেশত্যাগে চিন্তিত কর্তৃপক্ষ

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দুই বছর পর ভ্রমণ ভিসা চালু হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর দিয়ে চিকিৎসা ও ভ্রমণ পিপাসু ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। তিন দিন ধরে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে সার্ভার জটিলতার কারণে অনলাইনে কোন ধরনের তথ্য আপডেট বা প্রবেশ করা যাচ্ছে না।

ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পথে যাতায়াতকারী পাসপোর্ট ভিসাধারী যাত্রীদের সব তথ্য কাগজে-কলমে নোট করতে হচ্ছে। এতে সময়ক্ষেপণের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন তারা। সার্ভার জটিলতায় কোন দাগি অপরাধী দেশত্যাগ করে কি না, এ নিয়েও চিন্তিত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। যদিও সতর্কাবস্থায় রয়েছেন তারা। আগামী দু-একদিনের মধ্যে সার্ভার সমস্যা দূর হয়ে যাবে বলে জানায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

এর মধ্যে টানা বৃষ্টিতে ইমিগ্রেশনের সামনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তি বেড়েছে।

অন্যদিকে, সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ-বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

রোববার দুপুরে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ইমিগ্রেশনের সামনে জলাবদ্ধতা। জরাজীর্ণ ইমিগ্রেশনের সরু বারান্দায় নারী ও শিশুসহ যাত্রীদের ভিড়। ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রী ছাড়াও ভারতগামী বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে এসেছেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। ইমিগ্রেশনে সার্ভার কাজ না করায় যাত্রীদের পাসপোর্ট কাগজে-কলমে এন্ট্রি করতে দীর্ঘ সময় লাগছে। এভাবে সময়ক্ষেপণ নিয়ে কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করছেন।

অপরদিকে, জরাজীর্ণ ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে জলাবদ্ধতায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

যাত্রীরা নাক কুঁচকে বলেন, এই না হলে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইন-চার্জ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, রোববার দুপুর পর্যন্ত তিন দিনে আড়াই হাজারের বেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী এ পথে পারাপার হয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের তথ্য কাগজে-কলমে লিখিত ভাবে এন্ট্রি করা হয়েছে। সার্ভার সমস্যা সমাধান হলে ওইসব তথ্য আবার অনলাইনে আপডেট করা হবে।

জানা গেছে, আখাউড়া ইমিগ্রেশনে নির্মাণাধীন ভবনের কাজ ভারতীয় বিএসএফের বাধার মুখে বন্ধ রয়েছে। ফলে জনাকীর্ণ পুরাতন ভবনে এবং খোলা আকাশের নিচে প্রচণ্ড রোদ কিংবা বৃষ্টির মধ্যেও যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, আগরতলা ইমিগ্রেশনে বিএসএফ ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ব্যাগেজ তল্লাশি, সার্ভার জটিলতা, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং ইন্টারনেটে ধীরগতিসহ পুলিশের কড়া নজরদারির ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।

এরই মধ্যে আবার বাংলাদেশের আখাউড়া ইমিগ্রেশনে সার্ভার সমস্যা ও জরাজীর্ণ ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে জলাবদ্ধতা এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।

তবে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা আখাউড়া-আগরতলা চেকপোস্টে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধান ও যাত্রী পরিষেবা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন এ পথে চলাচলকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।