মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাড়ছে, নিষ্পত্তি হচ্ছে না

।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে ভোক্তারা নানা ধরনের প্রতারনার অভিযোগ তুলছেন। এসব অভিযোগ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে পাঠানো হলেও তা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। অভিযোগগুলো নথিভুক্ত করে রাখা হচ্ছে।

ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলছেন, জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে এই টেলিকম কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। আগেও এরকম অভিযোগ অনেক এসেছে। কিন্তু এগুলোর সুরাহা করা যাচ্ছে না। ফলে ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে ভোক্তার আস্থা কমছে।

অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি মোবাইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান উচ্চ আদালতে রিট করার কারণে ২০১৭ সালের মে মাসের পর থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আর এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারেনি।  কিন্তু ভোক্তারা অভিযোগ করে চলেছেন। এসব অভিযোগ উচ্চ আদালতে পাঠাতে হচ্ছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াগত কারণেই এগুলো ঝুলে আছে।

ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভোক্তারা বিজ্ঞাপন ও কোম্পানির অফারকৃত বিভিন্ন প্যাকেজে প্রতারণার অভিযোগ আনছেন বেশি। এছাড়া নেটওয়ার্ক সমস্যা, প্রতিশ্রুত সেবা না পাওয়া, তথ্যপ্রদানে অস্বীকৃতিসহ নানা অভিযোগ দায়ের করছেন। কিন্তু এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি হচ্ছে না।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের বিপরীতে প্রায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। যার ২৫ ভাগ অর্থ সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারী পেয়েছেন। মোবাইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেড সে বছরের মে মাসে এ ধরনের জরিমানার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে। ওই রিটের নিষ্পত্তি এখনও পর্যন্ত না হওয়ায় অধিদপ্তর আর মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে নতুন কোন অভিযোগ সুরাহা করতে পারছে না।

বিশ্লেষক মহল মনে করেন, এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির অধীনে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থাকা উচিৎ। তাছাড়া ভোক্তা অধিকার আইনে এ বিষয়ক সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। রিট মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের আরও সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রের ম্যানেজার অরুণিমা ইসলাম বলেন, অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি করা গেলে এই খাতে সুশাসন ও ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যেত। কিন্তু তা না হওয়ায় উল্টো ভোক্তার আস্থা নষ্ট হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন পথ গ্রহণের কথা ভাবছি। ক্যাব-এর জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হচ্ছে। সেখানে আলোচনা করে এ বিষয়ে আমরা দ্রুতই করণীয় ঠিক করব।