ইন্টারনেট প্যাকেজের ন্যূনতম মেয়াদ ৩ দিন কি ভোক্তাবান্ধব?

।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

সেলফোন অপারেটরদের ভয়েস ও ডাটাভিত্তিক সব সেবার মেয়াদ ন্যূনতম তিনদিন নির্ধারণ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ফলে তিনদিনের কম সময়ের জন্য এসব সেবা দিতে পারবে না অপারেটররা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি কার্যকর করতে সব সেলফোন অপারেটরকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ভোক্তাদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

অপারেটরদের প্রতি জারি করা বিটিআরসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব ধরনের প্যাকেজ, অফার ও বান্ডলের মেয়াদ হবে ন্যূনতম তিনদিন। নির্দেশনাটি ৩০ দিন পর পর্যালোচনা করা হবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। এছাড়া একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫ টাকা পে পার ইউজ প্রক্রিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। নির্ধারিত সীমা পার হলে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে ইন্টারনেট প্যাকেজ-বান্ডল-অফার সাবস্ক্রাইব করতে হবে।

ঢাকা কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহিন রাসেল বলেন, আগে ১ বা ২ টাকায় প্যাকেজ মিলত। এটার সুবিধা হলো, হুট করে ছোট কোনো দরকারে অল্প খরচে কাজটা হয়ে যেত। কিন্তু তিনদিনের প্যাকেজের দাম আগের অনুপাতে রাখা না হলে ছোট একটি দরকারেও বাড়তি ব্যয় করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম অবশ্য এই নিয়মে খুশি। তিনি বলেন, অল্প খরচের প্যাকেজগুলোতে সময়সীমা কম হওয়ায় তার উপযুক্ত ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। বিটিআরসি এর আগে ন্যূনতম মেয়াদ ৭ দিন করার কথা বলেছিল। সেখান থেকে তারা কেন সরে এল তা ঠিক বুঝলাম না।

উল্লেখ্য, গত মাসের শুরুতে মোবাইল অপারেটরগুলোকে দেয়া এক নির্দেশনায় প্যাকেজের সর্বনিম্ন মেয়াদ সাতদিন করার নির্দেশ দিয়েছিল বিটিআরসি। একই নির্দেশনায় প্যাকেজের সর্বোচ্চ মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০ দিন। নতুন নির্দেশনায় ন্যূনতম মেয়াদ নির্ধারণ করে দেয়া হলেও সর্বোচ্চ মেয়াদ নিয়ে কিছু বলা হয়নি।

বিটিআরসি গত মাসে যে নির্দেশনা দিয়েছিল সেটি নিয়ে আপত্তি ছিল মোবাইল অপারেটরগুলোর। তাদের দাবি, তাদের আয়ের একটি বড় উৎস স্বল্পমেয়াদি প্যাকেজ। এরপর বিটিআরসির সঙ্গে মোবাইল অপারেটরগুলোর বৈঠক হয়। বিটিআরসির কর্মকর্তারা গত ১৬ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জানান, ২৭ জানুয়ারির পর থেকে সাতদিনের কম মেয়াদের কোনো ইন্টারনেট প্যাকেজ থাকবে না।

ভোক্তারা বলছেন, বিটিআরসি কী যুক্তিতে এরকম উদ্যোগ নিচ্ছে, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তার ব্যাখ্যা দেশবাসীকে জানানো উচিৎ। নইলে এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে।