মৃত ব্যক্তি জরিমানার শিকার

মাদারীপুরে কালকিনি উপজেলায় ডাসার এলাকায় নির্দেশনা অমান্য করে এক শিঙাড়ার দোকানি দোকান খোলা রাখার দায়ে তাঁর মৃত বাবার নামে গুনতে হয়েছে ১০০ টাকা জরিমানা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারা দেশে কঠোর প্রশাসন। বিনা কারণে ঘর থেকে বের হলে বা দোকানপাট খোলা রাখলেই শাস্তিস্বরূপ গুনতে হচ্ছে জরিমানা। কিন্তু কঠোর বিধিনিষেধের নিয়ম ভঙ্গ করায় ১৯৭০ সালে মারা যাওয়া ব্যক্তিটিও ছাড় পাবেন না বিষয়টি অকল্পনীয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর রাখতে গতকাল শনিবার সকালে কালকিনি উপজেলার ডাসার বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান। এ সময় বিধিনিষেধের আওতামুক্ত দোকান ছাড়াও বেশ কিছু দোকানপাট খোলা রাখা ও বিনা কারণে ঘর থেকে বের হওয়ায় কয়েকজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায় করেন ইউএনও। এ সময় ছালাম সরদারের শিঙাড়ার দোকান খোলা রাখার অপরাধে সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ দমন আইনে তাঁকে ১০০ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়।

তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার রসিদে দোষী ব্যক্তির নামের জায়গায় লেখা আছে তাঁর মৃত বাবার নাম—এরফান সরদার। প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকায় মৃত বাবার হয়েই ১০০ টাকা জরিমানা দেন শিঙাড়ার দোকানি ছালাম সরদার।

৬৬ বছর বয়সী ছালাম সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব খারাপ অবস্থায় আছি। ঘরে চাল-ডাল নাই। তাই বাধ্য হয়ে দোকানে কিছু শিঙারা বিক্রি করার চিন্তায় খুলি। কিছু কেনাবেচাও করি। হঠাৎ স্যারেরা আইসা আমারে হুটহাট করে জরিমানা করে দিলেন। পরে দেখি তাঁরা আমার নামের পরিবর্তে আমার বাবার নামে জরিমানা করেছেন। খুব কষ্ট পাইছি। ১০০ টাকা কামাইতে পারি না। আর জরিমানা দিতে বোঝেন কত কষ্ট!’

ছালাম সরদার বলেন, তাঁর বাবা এরফান সরদার ১৯৭০ সালে মারা যান। তবু ভ্রাম্যমাণ আদালত এমনটা কেন করলেন, তিনি সেটা জানেন না। প্রশাসনের ভয়ে তিনি ১০০ টাকা জরিমানা পরিশোধ করেন।

সুত্র: [প্রথম আলো]