সেবার চার্জ/ফি/কমিশন নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যাংকসমূহকে বিভিন্ন ধরনের চার্জ/ফি/কমিশন ইত্যাদির পরিমাণ/হার নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানতকারী/বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রেও পরিমাণ/হার নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাতে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে দেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এতে আমানত সংক্রান্ত চার্জের বিষয়ে বলা হয়েছে, সঞ্চয়ী হিসাব খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহকরা ৫০০ টাকা এবং চলতি হিসাব খোলার ক্ষেত্রে এক হাজার টাকা জমাকরণপূর্বক নিজ নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। তবে, বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাব খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম জমার বাধ্যবাধকতা হতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত থাকবে। 

সঞ্চয়ী হিসাবে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি আদায় করা যাবে না। ১০ হাজার টাকার অধিক গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে প্রতি ছয় মাস পর পর রক্ষণাবেক্ষণ ফি আদায় করা যাবে। ১০ হাজার টাকার বেশি কিন্তু ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা।

২৫ হাজার টাকার বেশি থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। দুই লাখ টাকার অধিক থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা। ১০ লাখ টাকার অধিক গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। চলতি হিসাবে প্রতি ছয় মাস পর পর সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ও স্পেশাল নোটিশ ডিপোজিট (এসএনডি) হিসাবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা আদায় করা যাবে।

বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাবসমূহে কোনো প্রকার হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি আদায় করা যাবে না। একই ব্যাংকের অন্য শাখায় হিসাব স্থানান্তরের ক্ষেত্রে একই জেলায় সর্বোচ্চ ৫০ টাকা এবং অন্য জেলায় সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ফি আদায় করা যাবে। বিভিন্ন মাসিক সঞ্চয়ী হিসাব (ডিপোজিট পেনশন স্কীম) বা এফডিআর বা অন্য কোনো মেয়াদি আমানত মেয়াদপূর্তির আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে নগদায়ন ফি বা অনুরূপ ফি আরোপ করা যাবে না।

হিসাব বন্ধকরণের ক্ষেত্রে হিসাব বন্ধকরণ চার্জ হিসেবে সঞ্চয়ী হিসাবে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা এবং এসএনডি হিসাবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা আদায় করা যাবে। তবে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাবসমূহে হিসাব বন্ধকরণ বাবদ কোনো ফি আদায় করা যাবে না।

বিভিন্ন ধরনের হিসাবের বিপরীতে চেক বই ইস্যুর ক্ষেত্রে প্রকৃত খরচের ভিত্তিতে চার্জ নির্ধারণ করতে হবে। চেক বই হারানোর ক্ষেত্রে নতুন চেক বই ইস্যু বাবদ প্রকৃত খরচ ছাড়া অতিরিক্ত চার্জ/প্রসেসিং ফি আদায় করা যাবে না।

বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাব বলতে দেশের আর্থিক সেবা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে কৃষক, মুক্তিযোদ্ধা, দুঃস্থ, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন শ্রমিক, পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোর, ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীর সুবিধাভোগী, তৈরি পোষাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারী ক্ষুদ্র কারখানার কারিগর এবং স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারীদের ব্যাংক হিসাবসহ সব ধরনের ১০, ৫০ ও ১০০ টাকায় খোলা হিসাবসমূহ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময়ে নির্দেশিত অনুরূপ হিসাবসমূহকে বোঝাবে। হিসাবধারী বছরে দুইবার ব্যাংক স্টেটমেন্ট পাবে চার্জ ছাড়াই। এর বেশি নিলে চার্জ দিতে হবে ১শ টাকা।

ঋণ দেওয়া সংক্রান্ত: ঋণ প্রসেসিং ফি হিসেবে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে মোট মঞ্জুরী করা ঋণের সর্বোচ্চ ০.৫০ শতাংশ আদায় করা যাবে, তবে এর পরিমাণ ১৫ হাজার টাকার বেশি হবে না। ৫০ লাখ টাকার বেশি পরিমাণ ঋণের ক্ষেত্রে এ হার হবে সর্বোচ্চ ০.৩০ শতাংশ, তবে এর পরিমাণ ২০ হাজার টাকার বেশি হবে না। ঋণ আবেদন ফি নামে কোনো ফি আদায় করা যাবে না।