ক্যাব-ভোক্তাকন্ঠের ওয়েবিনারে বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙার তাগিদ

কনজুম্যার এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) ও ভোক্তাকন্ঠের যৌথ উদ্যোগে ‘পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধির অভিঘাতে ভোক্তা অধিকার’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয় ওয়েবিনার সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন ক্যাবের সংগঠক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান। 

দ্বিতীয় পর্বের ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতা রাজেকুজ্জামান। প্রবন্ধে তিনি পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধির ফলে ভোক্তার যে নাস্তানাবুদ অবস্থার তৈরি হয় সেই সম্পর্কে আলোকপাত করেন। একটি জরিপ তুলে ধরে তিনি বলেন দেশে ১০ শতাংশ মানুষ উচ্চবিত্ত। এর বাইরে বাকী ৯০ শতাংশ দেশীয় পণ্যের ভোক্তা এবং মূল্য বৃদ্ধির সাথে এই শ্রেনী সরাসরি সম্পৃক্ত। পণ্যের মূল্য বাড়লেও সেই অনুযায়ী আয় বৃদ্ধি না পাওয়ায় সামগ্রিক পরিবারের উপর একটা চাপ পরে। ফলশ্রুতিতে তাদের মানষিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটে। সামগ্রিক অর্থনীতিতে পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আয়ের সাথে মূল্য বৃদ্ধির অসামঞ্জস্যতা থাকার জন্য ৯০ ভাগ ভোক্তা নিম্নমানের পণ্য এবং সেবা গ্রহনে বাধ্য হয় এবং ফলশ্রুতিতে ভোক্তাদের উপর সূদুরপ্রসারি একটি প্রভাব পড়ে। মূল্যবৃদ্ধির এই অভিঘাত থেকে বাচাতে তিনি শুধু কাগজে কলমে নির্ভর না থেকে বাজার মনিটরিং এবং সিন্ডিকেট গুলো ভেঙ্গে একটা সামঞ্জস্যপূর্ন মূল্য নির্ধারনের আহ্বান জানান।  

আলোচনায় অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, মূল্য বৃদ্ধির অসমাঞ্জস্যতায় বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রন করা অসম্ভব হয়ে পরেছে। সরকারী কর্মচারী এবং প্রান্তিক পর্যায়ের উৎপাদনকারীদের আয়ের অসমঞ্জস্যতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারী কর্মকর্তারা যদি শেষ বয়সে এসে অবসর ভাতা পেয়ে থাকেন তাহলে যাদের উপর জিডিপির সিংহ ভাগ নির্ভর করে তাদের ক্ষেত্রে কেন এই অসমতা তৈরি হয় সেই দিক গুলো তুলে ধরেন। বাজার ব্যবস্থাপনা এবং আয়ের এই অসামঞ্জস্যতা দূর করতে পারলেই কেবল বাজার ব্যবস্থাপণায় নিয়ন্ত্রন আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ওয়েবিনারে অন্যান্য আলোচকদের মাঝে বক্তব্য রাখেন আধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক মলয় ভৌমিক ,ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া এবং মুসা মিয়া। আলোচকবৃন্দ তাদের আলোচনায় ভোক্তার উপর মূল্য বৃদ্ধির যে সুদুরপ্রসারী প্রভাব সেই বিষয়গুলো তুলে ধরেন। আলোচনায় তরুন সম্প্রদায়কে ক্যাবের সাথে সংযুক্ত করে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান।

এছাড়াও ওয়েবিনারে দিকনির্দেশনা এবং বিস্তারিত বিষয়ে অভিমত ব্যক্ত করেন কনজ্যুমার এসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান।

অক্ষম ভোক্তা এবং সক্ষম ভোক্তাদের মধ্যে বৈষম্য কমিয়ে আনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওয়েবিনারে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ভোক্তাকন্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান।

দ্বিতীয় দিনের ওয়েবিনারে দেশ বিদেশের সাংবাদিকদের পাশাপাশি অংশগ্রহন করেন ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি জাতীয় কমিটি ক্যাব, কনজ্যুমার এসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) সদস্যবৃন্দ এবং ক্যাবের জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিবৃন্দ। অনলাইন ওয়েবিনার লিংক: https://fb.watch/65qCpEoFQ3/