‘কক্সবাজার-দোহাজারী-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের’ কাজ এগিয়ে চলছে

অনুমোদন হলেও ঋণচুক্তি ও ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার জটমুক্ত হতে কেটে গেছে ছয় বছর। তবে আশার কথা হলো, সব জটিলতা কাটিয়ে বর্ষাকালের প্রতিকূলতা ও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প ‘কক্সবাজার-দোহাজারী-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের’ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পের অধীন পর্যটন নগরী কক্সবাজারে হচ্ছে ঝিনুক আকৃতির ‘আইকনিক স্টেশন’।

১২৮ কিলোমিটার রেলপথে স্টেশন হবে নয়টি। সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর হচ্ছে তিনটি বড় সেতু। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়ায় নির্মাণ হচ্ছে উড়াল সেতু।

• গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ
• হাতির চলাচলের জন্য থাকছে আন্ডারপাস
• কক্সবাজারে হবে আইকনিক স্টেশন
• ২০২২ সালে ঢাকা-কক্সবাজারে চলবে ট্রেন

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাকালে শ্রমিকদের প্রকল্প এলাকায় রেখেই কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দোহাজারীতে তিন কিলোমিটার সিগন্যাল তার বসানো হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে রামুর পানির ছড়া বাজার হয়ে কক্সবাজারমুখী নকশা ধরে রেলপথ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে মাটির উন্নয়নের কাজ চলছে। কোথাও চলছে সেতু নির্মাণ। প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন বলছে, গত ৩১ মে পর্যন্ত কাজ এগিয়েছে ৫৯ শতাংশ। ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পের দোহাজারী-কক্সবাজার অংশের শতভাগ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, পর্যটন নগরীর সঙ্গে রাজধানীর রেল যোগাযোগ ২০২২ সালের মধ্যে স্থাপিত হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলবে পর্যটকবাহী ট্রেন।

প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন বলছে, গত ৩১ মে পর্যন্ত কাজ এগিয়েছে ৫৯ শতাংশ। ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পের দোহাজারী-কক্সবাজার অংশের শতভাগ কাজ শেষ করা সম্ভব।

দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত এবং রামু থেকে মিয়ানমারের নিকটবর্তী ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক- এডিবি।

২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ রেলপথ নির্মাণ হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ। এছাড়া কক্সবাজার থেকে কম খরচে মাছ, লবণ, রাবারের কাঁচামালসহ বিভিন্ন বনজ ও কৃষিজাত পণ্য পরিবহন সহজ হবে।

এছাড়া করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ায় গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে কয়েক মাস ভৌত কাজ বন্ধ ছিল। পরে তা আবার শুরু হয়। কিছু স্থানে জমি হস্তান্তর বিলম্ব হয়। চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ৯২ শতাংশ মানুষ, সাতকানিয়ায় ৮৭ শতাংশ, লোহাগাড়ায় ৮৮ শতাংশ এবং কক্সবাজার জেলা সদরে ৭৮ শতাংশ, রামুতে ৭৭ শতাংশ ও চকরিয়ায় ৬৭ শতাংশ মানুষ ক্ষতিপূরণের অর্থ পেয়েছেন।

[সুত্র : আমাদের সময়]