কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (১ম পর্ব)

পৃথিবীতে বাংলাদেশ নামটি কৃষি উন্নয়নে বিশেষ পরিচিতি থাকলেও বিভিন্ন কারণে আমরা প্রকৃত স্বনির্ভর হতে পারিনি। যে কারণে সমন্বয়হীনতা, কৃষকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ, টেকনিক্যাল সাপোর্ট আশানুরূপ না পাওয়া, সময়মতো বীজ ও কৃষি ঋণ সহ চাষাবাদে আধুনিক ব্যবস্থাপনার সহযোগিতা এবং উৎপাদন উন্নয়নসহ এর আয়-ব্যয়ের যোগফল সমস্যা ইত্যাদি কারণে কৃষক দিশেহারা।

তবে আমাদের দেশে এখনো যত কৃষি জমি রয়েছে যদি সবকিছু চিন্তা ভাবনা হিসাব করে সরকারি-বেসরকারি পরিকল্পনা করা যায় তাহলে ১৬ কোটি মানুষের দেশে ৩২ কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাবার তৈরি সহজেই সম্ভব। যা নিজেরা ব্যবহার করে, বাকি খাদ্য রপ্তানি করে আয় হবে দেশের স্বনির্ভর করতে কাজে লাগানো যাবে।

সরকার কৃষি সম্প্রসারণ নীতিমালা অনুসরণ করেছেন যা শস্য, বনজ, মৎস্য ও পশুসম্পদ এর সমন্বয়ে কৃষিখাত গঠিত।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাদ্য সরবরাহ করা গ্রামীণ জনগণের আয় ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং পরিবেশ রক্ষা করার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন কৃষি উন্নয়ন বজায় রাখতে সরকার প্রতিশ্রুত থাকলেও সর্বস্তরের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।

অভ্যন্তরীণ কৃষি উৎপাদনে শস্য উপখাতে ৭১% বনজ সম্পদের ১০%, মৎস্যসম্পদের ১০%, ও পশুসম্পদের ৯% অবদান। যদিও জাতীয় অর্থনীতি কর্মসংস্থানে কৃষির অবদান বিভিন্ন কারণে বাধাগ্রস্থ তবুও আমরা সবাই মিলে কাজ করলে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও দারিদ্রতা হ্রাস কারণে স্থায়ী অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদারকরণ এ দেশের যে চ্যালেঞ্জ তাতে কৃষিখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য দেশে প্রয়োজনীয় পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।

কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (১ম পর্ব)

কৃষি সম্প্রসারণ সরকারের নীতিমালায় যা বলা হয়েছে, আসলে যদি কোন প্রকৃত কৃষক ভাইকে জিজ্ঞেস করা যায় তাহলে মনে হয় দেশের এক পারসেন্ট এরই জানা নেই এর কারণ সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়নে যে কর্মকৌশল পদ্ধতি রয়েছে তা কৃষকের কাছে অপ্রতুল। এবং যা আছে তা দিয়ে কোন প্রকারের জোড়াতালি দিয়ে সরকারি কর্মসূচি চালাতে হচ্ছে।

একটি গ্রাম, ইউনিয়ন বা উপজেলায় যে ধরনের সরকারি সহযোগিতা দরকার তা মোটেই সন্তোষজনক নয়।

কারণ একজন নির্বাহী কর্মকর্তা তিনি বহু কমিটির পরিচালক। আবার কৃষি কর্মকর্তা যিনি থাকেন মাসের অধিকাংশ সময় তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। কোন কৃষক সেখান থেকে যেমন পরামর্শ, টেকনিক্যাল সাপোর্ট বা কৃষিখাত শক্তিশালী করার জন্য কিছু সেখানে নাই বললেই চলে। উপজেলা কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন সুপারভাইজারকে খাদ্য উৎপাদনে চাষি ভাইদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে হবে নতুবা কৃষি খাতে উন্নয়ন অসম্ভব।

যেমন আমি একটি উপজেলায় ৪২ টি গ্রামে অনেক চাষি ভাইদের সাথে কথা বলেছি। এমন ও মানুষ পেয়েছি যারা সরকারি সহযোগিতা বা কতজন অফিসার কর্মরত আছেন তাদের জানা নেই। কৃষি উৎপাদনের সাথে দুর্যোগ ও পরিবেশ অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। আমরা যত চেষ্টাই করি না কেন যদি পরিবেশ ও দুর্যোগ আমাদের সহায়ক না হয় তাহলে ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা থেকেই যায়। তবুও চেষ্টা করলে বেঁচে থাকার জন্য যে খাদ্য আমাদের প্রয়োজন তা উৎপাদন করা যাবে যদি স্থানীয়ভাবে সরকারি-বেসরকারি সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের থাকে।

[চারটি পর্বের আজ দ্বিতীয় পর্ব]

১ম পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (১ম পর্ব)

তৃতীয় পর্বের জন্য চোখ রাখুন: বিশেষ রচনা Archives – Voktakantho

সম্পাদিত: এস কে এন, Author at Voktakantho

লেখকঃ

জামিল চৌধুরী

সভাপতি,

ক্যাব, সিলেট জেলা শাখা