তালেবানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র

তালেবানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল। আজ শনিবার ও আগামীকাল রোববার কাতারের রাজধানী দোহায় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্ত ধাপে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের পর এই প্রথম দুপক্ষের উচ্চপর্যায়ের মধ্যে কোনো বৈঠক হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দোহায় বৈঠকে অংশ নেওয়া মার্কিন প্রতিনিধিদলে রয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর, সহায়তা সংস্থা ইউএসএইড ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। তবে এবারের আলোচনায় আফগানবিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত জালমাই খলিজাদ উপস্থিত থাকছেন না। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের গোপনে আলোচনা হয়েছিল। ওই আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন খলিজাদ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে থাকবেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের উপবিশেষ প্রতিনিধি টম ওয়েস্ট ও ইউএসএইডের মানবিক সহায়তাবিষয়ক কর্মকর্তা সারাহ চার্লস। তালেবানের পক্ষে আলোচনা করবেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এবারের বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। তাঁদের ভাষ্য, আফগানিস্তানে এখনো আটকে থাকা মার্কিন নাগরিক এবং গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কাজ করা আফগানদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে তালেবানকে চাপ দেওয়া হবে। আলোচনায় তোলা হবে অপহরণের শিকার মার্কিন নাগরিক মার্ক ফ্রেরিচসের মুক্তির বিষয়টিও। এ ছাড়া আফগানিস্তানে যেন আল-কায়েদা বা অন্য কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী আবার মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে—এমন প্রতিশ্রুতি চাওয়া হবে তালেবানের কাছে।

তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে বিদেশি মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশের সুযোগ করে দিতেও তালেবানের ওপর চাপ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে এবারের বৈঠকে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না বলে জানিয়েছেন শীর্ষ এক মার্কিন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তালেবান সরকারকে তাদের কাজের মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি অর্জন করতে হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র আগেই জানিয়ে দিয়েছে।

চলতি বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও মিত্র দেশগুলোর সেনাদের চূড়ান্ত ধাপে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর আগেই ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর এক দিন আগেই কাবুল থেকে বিদেশি নাগরিক ও ঝুঁকিতে থাকা আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দেশটি থেকে ১ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদে নেওয়া হয়। তবে এখনো দেশটিতে আটকা পড়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাকারী কয়েক হাজার আফগান।