নরসিংদীতে ৩৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করেছে প্রাণ-আরএফএল

নরসিংদীতে পথচলা শুরুর পর তিনটি কারখানায় ৩৩ হাজার লোকের কর্মসংস্থান করতে সক্ষম হয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। এসব কারখানার জনবলের ৯০ শতাংশ স্থানীয় যেখানে প্রায় ২০ হাজার নারী কর্মী কাজ করছে। এছাড়া স্কুল, হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

প্রাণ-আরএফএলের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার (১৮ অক্টোবর) নরসিংদীর পলাশে প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল।

তিনি বলেন, ‘নরসিংদী জেলা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জন্য অত্যন্ত আবেগের একটি জায়গা। এখান থেকে ক্ষুদ্র পরিসরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা চালুুর মাধ্যমে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ আজ দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হতে পেরেছে এবং দেখতে দেখতে এ গ্রুপ ৪০ বছর অতিক্রম করে ফেলেছে। নরসিংদীতে আমাদের কারখানা স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্য মূলত এখানকার সম্ভাবনাময় বিশাল জনগোষ্ঠী, সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অনকূল পরিবেশ কাজে লাগানো। আমরা সবসময় স্থানীয়দের সহযোগিতা পেয়ে আসছি, যার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’

কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘প্রাণ-আরএফএলের অন্যতম উদ্দেশ্য ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন। নরসিংদীতে আমাদের তিনটি কারখানায় শতাধিক প্রোডাকশন লাইন রয়েছে। আমরা আগামী দিনে ইলেকট্রনিকস, লিফট ম্যানুফ্যাকচারিং, ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং ও রিসাইক্লিং প্ল্যান্টসহ কয়েকটি খাতে আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছি। এর ফলে আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে’।

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দুর্যোগে আমরা নরসিংদীর মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এবারের করোনার মহামারিতেও আমরা সাধ্যমতো পাশে থেকেছি। আমাদের ‘সান হেলথকেয়ার’ এখন স্বল্প পরিসরে নরসিংদীর মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। আগামীতে এটি ৫০ শয্যা হাসপাতালে রূপান্তর করতে কাজ চলছে, যেটি বাস্তবায়ন হলে এখানকার স্বাস্থ্য সেবায় বড় ভূমিকা রাখবে প্রাণ-আরএফএল। প্রাণ-আরএফএল পাবলিক স্কুলও সুনামের সঙ্গে শিক্ষার প্রসার কাজ করছে। আমরা মনে করি, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা পেলে আমাদের আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগাবে।’

প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের নির্বাহী পরিচালক কমান্ডার (অব.) মো. শামছুল আলম মিয়া বলেন, ‘এখানকার পরিবেশ ও স্থানীয় মানুষের সহযোগিতার কারণে আমরা নতুন নতুন ব্যবসায় বিনিয়োগ করছি ও সফল হচ্ছি। স্থানীয় মানুষ, গণমাধ্যম ও প্রশাসনের সহযোগিতা না পেলে আমরা কখনোই এতদূর আসতে পারতাম না।’

প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জেনারেল ম্যানেজার তানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কারখানা পরিচালনায় পরিবেশের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছি। নরসিংদীর তিনটি কারখানাতেই আমাদের বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) রয়েছে, যার মাধ্যমে উৎপাদিত সবধরনের বর্জ্য শোধন করা হয়।’

এসময় ডাঙ্গা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ফজলে রাব্বি, প্রাণ ফ্যাক্টরি ঘোড়াশালের জেনারেল ম্যানেজার দীপক কুমার দেবসহ গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।