বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভোক্তাস্বার্থ

।। অধ্যাপক এম শামসুল আলম ।।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দরপতন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় আমাদের অর্থনীতি বিশেষভাবে লাভবান হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত এখন আর আর্থিক ঘাটতিতে নেই। বরং লাভে আছে। অবশ্য কৌশলগত কারণে বিদ্যুৎ খাতে ঘাটতি দেখানো হচ্ছে। এ খাত উন্নয়ন ব্যবসাবান্ধব হওয়ায় ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় ঝুঁকি বাড়ছে। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা কার্যকারিতা হারাচ্ছে।

২. এখনো জ্বালানি চাহিদার ৬০ শতাংশের বেশি মেটানো হয় আমাদের নিজস্ব গ্যাসে। একদিকে জ্বালানি চাহিদা দ্রুত বাড়ছে, অন্যদিকে গ্যাসের মজুদও শেষ হতে চলেছে। ফলে তরল জ্বালানি, কয়লা, এলপিজি ও এলএনজি আমদানি গুরুত্ব পাচ্ছে। ধারণা করা যায়, ২০২১ সাল নাগাত জ্বালানি প্রবাহে আমদানি করা জ্বালানির অনুপাত গ্যাসের তুলনায় বেশি হবে। পরবর্তীতে সে অনুপাত বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ফলে জ্বালানি সরবরাহ ব্যয়বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিদ্যুৎসহ সকল সেবা ও পণ্যের দাম বৃদ্ধিও অব্যাহত থাকবে। তাই জীবনযাত্রার অব্যাহত ব্যয়বৃদ্ধির সঙ্গে তালমিলিয়ে অধিকাংশ মানুষের আয়বৃদ্ধি না হলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পাবে। তাতে সরকারের রাজস্ব আহরণে সংকট দেখা দেবে। এই আশঙ্কায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ ব্যয়বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু কৌশলগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সে উদ্যোগগুলো নানা কারণে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় টেকসই ‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা’ নিশ্চিত হওয়া কঠিন। তাই এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা জরুরি।

৩. সরকারের মূল লক্ষ্য জনগণকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করার জন্য এ-খাত উন্নয়নে প্রতিযোগিতা এবং জনগণের অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে-

ক. গ্যাসের মূল্য সহনীয় রাখার জন্য গ্যাস সরবরাহে দেশীয় কোম্পানির (বাপেক্স, বিজিএফসিএল ও এসজিএফসিএল) গ্যাসের অনুপাত বৃদ্ধি হওয়া দরকার। সে-জন্য গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে ওই সব কোম্পানির বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্যাস বিলের সঙ্গে বাড়তি অর্থ দিয়ে ভোক্তারা ‘গ্যাস উন্নয়ন তহবিল’ গঠন করে। এ তহবিল এসডি-ভ্যাট মুক্ত। এ তহবিলে বছরে জমা হয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এ-অর্থ অনুদান হিসেবে বিনিয়োগ হওয়ার শর্তে ভোক্তারা এ তহবিল গঠন করে।

খ. সম্প্রতি গ্যাস বিলের সঙ্গে গ্যাসের ‘সম্পদমূল্য’ বাবদ অর্থ নেয়া হচ্ছে। তা থেকে সরকার এসডি-ভ্যাট বাবদ ৫৫ শতাংশ পায়। বাদবাকি ৪৫ শতাংশ অর্থে ‘জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল’ গঠিত হয়েছে। উচ্চ মূল্যের জ্বালানি আমদানিতে জ্বালানির সরবরাহ ব্যয়বৃদ্ধি পাবে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যহার বৃদ্ধি হবে। সে-বৃদ্ধি যেন সহনীয় হয় সে-জন্য এ তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ হবে- এই লক্ষ্যে এ তহবিল গঠিত। এ তহবিলে বছরে জমা হয় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। ওই লক্ষ্য অর্জন হতে হলে এ অর্থও ঋণ নয়, অনুদান হিসেবে বিনিয়োগ হতে হবে।

গ. সাশ্রয়ী মূল্যে যেন ভোক্তারা বিদ্যুৎ পেতে পারে সেজন্য পিডিবি’র বিনিয়োগ সক্ষমতা থাকা দরকার। তাই বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে বাড়তি অর্থ দিয়ে ভোক্তারা ‘বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন তহবিল’ গঠন করে। এ তহবিলে বছরে জমা হয় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। এ অর্থ অনুদান হিসেবে পিডিবি’র প্রকল্পে বিনিয়োগ হয়।

ঘ. আইওসি’র গ্যাস এসডি-ভ্যাট মুক্ত থাকায় গ্যাস খাত লাভে ছিল। এনবিআর সম্প্রতি আইওসি’র গ্যাস থেকে এসডি-ভ্যাট আদায় শুরু করায় গ্যাস খাত ঘাটতিতে আছে। গ্যাসের মূল্য ৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে সে ঘাটতি সমন্বয় হতে পারে। কিন্তু বর্ধিত মূল্যের ৫ শতাংশ কর্পোরেট কর ও লভ্যাংশ এবং ৫৫ শতাংশ এসডি-ভ্যাট পরিশোধের বিধান থাকায় সব মিলিয়ে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয় ৬৫ শতাংশ। ফলে রাজস্ব যৌক্তিক করার প্রয়োজনে গ্যাসের ওপর থেকে এসডি প্রত্যাহারের প্রস্তাব সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে।

ঙ. কোরিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়ার যে সকল দেশে বিদ্যুৎ খাত সরকারি খাতে থেকেও ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে সে-সব দেশের তথ্যাদি/অভিজ্ঞতাসহ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে এ বিষয়ে কি রূপ পরিবর্তন আনা হয়েছে সে-সব বিষয় খতিয়ে দেখে সে আলোকে পিডিবি’র ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা এবং পিডিবি’কে অধিকতর দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলাসহ এর সার্বিক কর্মকাণ্ডের উৎকর্ষ সাধনে বর্তমানে কোনো বাধা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। (বিদ্যুৎ বিভাগের ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তারিখের ৪৬২ নং পত্র)

ওপরে বর্ণিত বিষয়গুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, কেবলমাত্র করের অর্থে নয়, জনগণের সরাসরি দেয়া অর্থে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। অর্থাৎ উন্নয়নে জনগণের অংশগ্রহণ রয়েছে। সরকারি খাতে রেখে বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নের বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে। তাই পিডিবি’র দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মকাণ্ডের উৎকর্ষ সাধন প্রাধান্য পেয়েছে।

৪. কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাণিজ্যিকীকরণ ও সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির নীতি ও কৌশল অবলম্বনে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত উন্নয়ন ও পরিচালিত হওয়ায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তরল জ্বালানির দরপতন সুবিধা সাধারণ মানুষ পায়নি। সাশ্রয়ী বা ন্যায্য মূল্যে নয়, অধিক ও অন্যায্য মূল্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ হচ্ছে। জ্বালানি প্রবাহে দেশি কোম্পানির গ্যাসের অনুপাত কমছে, বিদেশি কোম্পানির বাড়ছে। অচিরেই নিজস্ব গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস পাবে। তরল জ্বালানি ও এলপিজি আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উচ্চ মূল্যের এলএনজি অচিরেই জ্বালানি প্রবাহে যোগ হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আগামীতে জ্বালানি সরবরাহ ব্যয়বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। সেই ব্যয়বৃদ্ধি মোকাবিলায় গ্যাস উন্নয়ন তহবিল, জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল ও বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন তহবিল অকার্যকর। এমন কি ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় ঝুঁকি বৃদ্ধির অন্যতম নিয়ামক। সে সংক্রান্ত কিছু নমুনা এবং বিচার বিশ্লেষণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

ক. ভোক্তাদের মতামতের ভিত্তিতে বিইআরসি গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ব্যবহরের নীতিমালা প্রণয়ন করে। সে-নীতিমালা মতে দেশীয় কোম্পনি কর্তৃক গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে ওই অর্থ অনুদান হিসেবে বিনিয়োগ হবে। অর্থাৎ এ অনুদান ভর্তুকির বিকল্প হবে। অথচ ভোক্তাদের মতামত উপেক্ষা করে এ-অর্থ সুদের বিনিময়ে ব্যাংকে এফডিআর রাখা হয় এবং অংশ বিশেষ কোম্পানিগুলোকে ঋণ দেয়া হয়। বর্তমানে দেশীয় কোম্পানির প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন ব্যয় গড়ে ৮০ টাকা। সে গ্যাস সরকার ক্রয় করে বাপেক্সের নিকট থেকে ২৫ টাকায়। বিজিএফসিএল ও এসজিএফএল-এর নিকট থেকে ৭ টাকায়। ফলে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থে দেশীয় কোম্পানির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়েনি। বরং আর্থিক ঘাটতি ও ঋণের বোঝা উভয়ই বেড়েছে। এমন পরিস্থিতি রাষ্ট্র সৃষ্টি করতে পারে! ভাবা যায় না।

খ. হিসেবে দেখা যায়, এ তহবিল থেকে ২০১৫ সাল নাগাদ ২১টি প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকে এফডিআর রাখা আছে ২ দশমিক ৫০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সাল নাগাদ তহবিলে জমা হয় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯ সালে যখন গ্যাস উন্নয়ন তহবিল গঠিত হয় তখন সরবরাহকৃত গ্যাসে দেশীয় কোম্পানির গ্যাসের অনুপাত ছিল ৫২ শতাংশ। এখন ৪১ শতাংশ। এ-সব তথ্যাদিতে বোঝা যায়, গ্যাস উন্নয়ন তহবিল লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ এবং সক্ষমতার পরিবর্তে এ তহবিলের অর্থ দেশীয় কোম্পানিকে ঋণগ্রস্ত করে বিনিয়োগ অক্ষমতা বাড়াচ্ছে। যা এ তহবিল গঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

গ. ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে গ্যাসের পুনরায় মূল্য বৃদ্ধির আদেশ হয়। সে আদেশে বিইআরসি কথিত ওই ঘাটতি সমন্বয়ের লক্ষ্যে দেশীয় কোম্পানির গ্যাস ক্রয়মূল্য উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে মার্জিন অর্থাৎ মুনাফা যোগ করে নির্ধারণ করেছে। সেই অনুযায়ী গ্যাসের মূল্যহার বৃদ্ধির আদেশ হয়। কিন্তু সরকার দেশীয় কোম্পানির গ্যাসের বিদ্যমান ক্রয়মূল্য পরিবর্তন করে বিইআরসি’র নির্ধারিত ওই ক্রয়মূল্য কার্যকর করেনি। ফলে বাপেক্সের গ্যাস ক্রয়মূল্য ২৫ টাকা এবং বিজিএফসিএল ও এসজিএফএল-এর গ্যাস ক্রয়মূল্য ৭ টাকা এখনো বহাল রয়েছে। মাঝখান থেকে অনুদানের পরিবর্তে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ঋণ হিসেবে ওইসব কোম্পানির প্রকল্পে ব্যয় হওয়ায় মূল্য বৃদ্ধিতে সুদসহ আনুপাতিক হারে শুল্ক-ভ্যাট, সম্পদমূল্য, অবচয়, কোম্পানির মার্জিন, সরকারের আগাম কর্পোরেট কর ও গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের হিস্যা যোগ হয়েছে। অর্থাৎ গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, ভোক্তাকে সে-অর্থের ১ দশমিক ৮ গুণেরও বেশি দিতে হবে। আবার দেশীয় কোম্পানির গ্যাসের অনুপাত হ্রাস পাওয়ায় বিদেশী কোম্পানির গ্যাস ক্রয়ের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাতে বর্ধিত আর্থিক ঘাটতি সমন্বয়ে বাড়তি মূল্য ভোক্তা দিচ্ছে। এভাবেই গ্যাস উন্নয়ন তহবিল কেবল অকার্যকর হচ্ছে, তাই নয়, ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকারও খর্বের কারণও হচ্ছে।

ঘ. জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিলের অর্থও গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থের অনুরূপ এলএনজি অবকাঠামো উন্নয়নে সুদে ঋণ হিসেবে বিনিয়োগ হবে। ফলাফলও হবে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের মতোই। অথচ অনুদান হিসেবে বিনিয়োগ হলে অনেক স্বল্প ব্যয় এলএনজি সরবরাহ করা যেত। সার্বিকভাবে গ্যাসের সরবরাহ ব্যয়বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হতো। ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা করা সহজ হতো।

ঙ. অনুদান হিসেবে নয়, বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন তহবিলের অর্থ সুদে ঋণ হিসেবে বিনিয়োগের জন্য এ তহবিল সংক্রান্ত গাইডলাইন ২০১২-এর সংশোধনী আনা হচ্ছে। সংশোাধনী মতে এ অর্থ শুধু ঋণ হিসেবেই বিনিয়োগ হবে না, বিনিয়োগ হবে পিডিবি ছাড়াও সরকারি মালিকানাধীন সংস্থা ও কোম্পানির সৌর, বায়ু ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬০ শতাংশ। পিডিবি পাবে মাত্র ৪০ শতাংশ। তবে সে অর্থ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণে নয়; রক্ষণাবেক্ষণ, পুনঃক্ষমতায়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে ব্যয় হবে। সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহে পিডিবি’র বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এভাবেই এ তহবিল অকাযর্কর হয়েছে। ফলে ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় ঝুঁকি বেড়েছে।

চ. বিদ্যুৎ বা জ্বালানি খাত উন্নয়নে সরকারের সফলতার দাবি আজ প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত। কারিগরি বিবেচনায় অগ্রহণযোগ্য। সরকারি খাতে রেখে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা বিবেচনা রেখে পিডিবি’র ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধিসহ এর সার্বিক কর্মকাণ্ডের উৎকর্ষ সাধনে বিদ্যমান বাধা অপসারণের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা প্রতিপালিত হয়নি। বরং বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিল সংক্রান্ত গাইডলাইনে আনা সংশোধনী পিডিবি’র দক্ষতা বৃদ্ধি ও উৎকর্ষ সাধনে বাধা অপসারণের পরিবর্তে সে বাধা আরো দৃঢ় ও মজবুত করেছে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অকার্যকর করেছে। ফলে ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার বিপন্ন না হয়ে পারে না।

ভোক্তারা মনে করে সাশ্রয়ী মূল্যে (Least Cost) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করা- সরকারের এ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে কার্যকর হতে হবে। ওপর বর্ণিত তহবিলগুলোর অর্থ ভোক্তা স্বার্থে ভোক্তাদের মতামতের ভিত্তিতে ব্যবহার নিশ্চিত হতে হবে। সে-জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরি।

প্রথম প্রকাশ : মে, ২০১৮।

লেখক : জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। উপদেষ্টা, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)