এ যেন বাসী খাবারের বিল্ডিং!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকায় ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে পছন্দের স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম লালবাগ কেল্লা। শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে কিছুটা প্রসান্তি পেতে প্রতিদিন শত শত দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী ছুটে আসেন লালবাগ এলাকার এই দুর্গে। দর্শনার্থীদের পুঁজি করে কেল্লার সামনের প্রায় প্রতিটি ভবনে গড়ে উঠেছে রেস্টুরেন্ট। এসব রেস্টুরেন্টগুলোতে কেউ পরিবার নিয়ে খেতে আসেন আবার কেউ বা আসেন ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে। সাময়িক সময়ের জন্য ভালো খাবারের আসায় এসব রেস্টুরেন্টে আসলেও নিজের অজান্তেই অনেকেই খাচ্ছেন ফ্রিজে রাখা বাসী খাবার।

বৃহস্পতিবার নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে লালবাগ এলাকায় অভিযানে যায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কেল্লার ঠিক সামনের একটি ভবনে তিন থেকে চারটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। শুধু এই ভবন নয়, কেল্লার সামনে প্রতিটি ভবনেই একাধিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ঐ ভবনের ৪র্থ তলার এক পাশে রয়েছে পাস্তা ক্লাব। নামে পাস্তা থাকলেও সব খাবারই বিক্রি করেন প্রতিষ্ঠানটি। পাস্তা ক্লাবের রান্না ঘরে বাসী খাবারের ছড়াছড়ি। ফ্রিজের মধ্যে রাখা হয়েছে বাসী খাবার। যা গরম করে ভোজন রোসিকদের খাওয়ানো হচ্ছে। বাসী রাইস, বাসী মাংস এবং নুডুলস পাওয়া যায়।

বাসী খাবার রাখার অপরাধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আইনের ৪৩ ধারায় দোসী সাবস্ত করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানাকৃত টাকা তাৎক্ষণিক আদায় করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৩ ধারায় বলা হয়েছে:
অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ: মানুষের জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি হয় এমন কোন প্রক্রিয়ায়, যা কোন আইন বা বিধির অধীনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কোন পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করা হলে অনুর্ধ্ব দুই বছরের কারাদণ্ড বা অনাধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

একই ভবনের ৫ম তলায় রয়েছে বিটার গ্রেস নামের আরও একটি রেস্টুরেন্ট। সেখানেও পাওয়া যায় বাসী খাবার। পরে এই রেস্টুরেন্টকেও ৪৩ ধারায় দোসী সাবস্ত করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানাকৃত টাকা তাৎক্ষণিক আদায় করা হয়।

ভবনের ৬ষ্ট এবং ছাদে রয়েছে রয়েল ক্যাসেল নামের আরও একটি রেস্টুরেন্ট। এদেরও একই অবস্থা। ফ্রিজের মধ্যে রাখা হয়েছে বাসী খাবার। এই প্রতিষ্ঠানকেও ৪৩ ধারায় দোসী সাবস্ত করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানাকৃত টাকা তাৎক্ষণিক আদায় করা হয়।

এছাড়া নিত্যপণ্যের বাজার পরিদর্শন করে চাল, চিনি,পেঁয়াজ, কাঁচা সবজি, পোল্ট্রি, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য, পণ্য ক্রয়-বিক্রয় রসিদ, পণ্যের মূল্য তালিকা পরিবীক্ষণ করা হয়। এসময় বাজারে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রয়, পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ সংরক্ষণ, মূল্য তালিকা প্রদর্শনের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের হ্যান্ডমাইকে সতর্ক করা হয়।

ঢাকা মহানগরীতে অধিদপ্তরের ৩টি টিম কর্তৃক অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস, ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) মো. মাগফুর রহমান।

এ প্রসঙ্গে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা জানান, নিত্যপণ্যের দাম ভোক্তা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সাপ্তাহিক ছুটিরদিনসহ নিয়মিতভাবে সারাদেশে অধিদপ্তরের মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। বাজারে কোন প্রকার অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে অসাধু ব্যবসায়ীদের তিনি সতর্ক করেন।

আরইউ