বৈশ্বিক কোভিড সহনশীলতা সূচকে ১৮ ধাপ উন্নতি বাংলাদেশের

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:  করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের কোভিড রেজিলিয়েন্স বা কোভিড সহনশীলতা সূচকে অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বর মাসে ১৮ ধাপ এগিয়ে বিশ্বের ৫৩টি দেশের মধ্যে ১৭তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। গত অক্টোবরে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৫তম।

মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ নভেম্বর মাসের করোনাভাইরাস সহনশীলতা সূচক প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর নিম্ন হারের কারণে সহনশীলতার এই সূচকে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যসেবার মান, টিকাদান, সামগ্রিক মৃত্যুহার, ভ্রমণ পুনরায় শুরু এবং সীমান্ত বিধি-নিষেধ শিথিলসহ মোট ১২টি তথ্য সূচকের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের বৃহত্তম ৫৩ অর্থনীতির দেশকে নিয়ে এই সূচক তৈরি করেছে ব্লুমবার্গ।

সূচক অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় মোট ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৬৬ দশমিক ২। যেখানে ২৬তম স্থানে থাকা প্রতিবেশী ভারতের এই স্কোর ৬৩ দশমিক ৪ এবং ৩৯তম স্থানে থাকা পাকিস্তানের ৫৭ দশমিক ৫।

মার্কিন এই সংবাদমাধ্যম বলছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের নিম্নমুখী প্রবণতার ফলে সহনশীলতা সূচকে বাংলাদেশ গত জুলাইয়ের ৪৮তম স্থান থেকে আগস্টে ৪৪তম, সেপ্টেম্বরে ৩৯তম, অক্টোবরে ৩৫তম এবং নভেম্বরে ১৭তম স্থানে উঠে এসেছে। গত চার মাসে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর সর্বনিম্ন রেকর্ড এবং ৫০০ দিনেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি স্কুল খুলে যাওয়ায় কোভিড সহনশীলতার এই সূচকে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে বাংলাদেশের।

বাংলাদেশে মহামারি পরিস্থিতির উন্নতির পেছনে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে টিকাদান। ব্লুমবার্গ বলছে, বাংলাদেশের প্রতি ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৫৬ দশমিক ৩ জন মানুষকে টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতে ৮৯ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আর পাকিস্তানে টিকাদানের এই হার ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ। কিন্তু দেশগুলোর এই জনগোষ্ঠীকে টিকার পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়েছে কি না তা উল্লেখ করেনি ব্লুমবার্গ

সূচকে বলা হয়েছে, গত মাসে বাংলাদেশে দৈনিক প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ভারতে সংক্রমণের এই সংখ্যা প্রতি লাখে ২৩ জন এবং পাকিস্তানে ৫ জন। কিন্তু গত তিন মাসে বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর হার ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ, ভারতে যা ছিল ১ দশমিক ৭ এবং পাকিস্তানে ২ দশমিক ৪ শতাংশ।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখে প্রাণহানি ঘটেছে ১৭০ জনের এবং ভারতে সেই সংখ্যা ৩৪০, পাকিস্তানে ১৩০।

ব্লুমবার্গের করোনা সহনশীলতার বৈশ্বিক এই সূচকের শীর্ষে আছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। মহামারি মোকাবিলায় সফলতায় অক্টোবরের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে শীর্ষে উঠেছে দেশটি। মহামারি মোকাবিলায় মোট ১০০ স্কোরের মধ্যে ৭৩ দশমিক ২ শতাংশ পেয়ে সবার ওপরে আছে আমিরাত। দেশটির বাসিন্দাদের শতভাগ টিকা নিশ্চিতের পাশাপাশি বুস্টার ডোজও দেওয়া হয়েছে।

করোনা মোকাবিলার এই সহনশীলতা সূচকে সবচেয়ে খারাপ স্কোর ফিলিপাইনের। দেশটি মোট ৪৩ দশমিক ১ স্কোর পেয়ে তালিকার তলানিতে অবস্থান করছে।