ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি সহায়তায় কলসেন্টার গড়েছে ক্যাব

।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বাজার অর্থনীতির এই যুগে ভোক্তাদের নানা অভিযোগ একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ভোক্তা অধিকার রক্ষা সংগঠন হিসেবে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বহুবিধ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এক্ষেত্রে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সংগঠনটির বর্তমান কর্মপরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত ভোক্তাদের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তিতে সহায়ক একটি কার্যকর ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা। সহজেই ভোক্তা যাতে তার অভিযোগ করতে পারেন এই লক্ষ্যে ক্যাব বাংলাদেশি ভোক্তাদের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি ‘কলসেন্টার’ চালু করেছে।

কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় কিংবা ভোগ করতে গিয়ে যদি কেউ প্রতারিত বোধ করেন, তাহলে উক্ত ভোক্তা এই কলসেন্টারে ফোন করে অভিযোগ করতে পারবেন। চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ভোক্তারা প্রথমে তথ্য, পরামর্শ ও অন্যান্য সহায়তা পাবেন। অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে কলসেন্টার থেকে ভোক্তাকে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়া হবে। এরপর কলসেন্টার থেকে এই অভিযোগ চলে যাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। তাদের সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় অভিযোগ নিষ্পত্তি হবে। কোনো অভিযোগ যদি স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সমাধা না করা যায়, সেক্ষেত্রে যদি বর্ধিত কোনো পদক্ষেপের প্রয়োজন হয় তাহলে ক্যাব-এর ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি জাতীয় কমিটির কাছে অভিযোগটি পাঠানো হবে। জাতীয় কমিটি সরাসরি অভিযোগটি দেখভাল করবে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ফলে এ থেকে ভোক্তা ক্ষতির প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পেয়ে উপকৃত হবেন।

কলসেন্টার যেভাবে কাজ করবে
ভোক্তারা সরাসরি কলসেন্টারে ফোন করে অভিযোগ করতে পারবেন। তাছাড়াও মেইলের ম্যাধ্যমে কিংবা সরাসরিও আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। যে সকল ছাত্ররা আমাদের সাথে পত্রিকায় কাজ করবেন প্রতিবেদনের জন্য তথ্য অন্বেষণের সময় তারা যে অভিযোগসমূহ পাবেন সেগুলি কলসেন্টারের ম্যাধমেই অধিদপ্তরে যাবে।

চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ভোক্তারা প্রথমে তথ্য, পরামর্শ ও অন্যান্য সহায়তা পাবেন। এরপর অভিযোগ করতে চাইলে কলসেন্টার থেকে তাকে সে বিষয়ক দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে। যেমন, অভিযোগের সপক্ষে কোনো কাগজপত্র থাকলে তার কপি সহকারে, ওয়েবসাইটে থাকা নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে তা কলসেন্টারের ঠিকানায় পাঠানোর অনুরোধ করা হবে। ভোক্তা অপারগ হলে তাকে কলসেন্টার থেকে সহযোগিতা দেয়া হবে। ভোক্তা চাইলে তার পক্ষ হয়ে কলসেন্টার থেকে অভিযোগ দায়ের করা হবে। এরপর কলসেন্টার থেকে এই অভিযোগ চলে যাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। তাদের সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় অভিযোগ নিষ্পত্তি হবে। কলসেন্টার থেকে অভিযোগকারীকে নিয়মিত এ বিষয়ে আপডেট জানানো হবে।

এসব তথ্য একটি ডাটবেইজে সংরক্ষিত হবে, তথ্যাদি বিশ্লেষণ ও গবেষণা করে প্রকাশের জন্য ক্যাব সংশ্লিষ্ট একটি শাখাও এর সঙ্গে গড়ে তুলবে। সেখান থেকে নিয়মিত বাংলাদেশে ভোক্তা অধিকার ও অভিযোগের ধরণ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এগুলো আবার ক্যাব-এর অনলাইন নিউজ পেপারে প্রকাশিত হবে।

শুরুতে সীমিত পরিসরে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও তিন বছরের মধ্যে অভিযোগ গ্রহণ ও সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে ক্যাব। ক্যাব-এর সভাপতি ও দুর্নিতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান আশা প্রকাশ করেন যে, এই উদ্যোগের ফলে ক্যাব জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবে। কলসেন্টারের ম্যানেজার অরুণিমা ইসলাম বলেন, ৩১ অক্টোবর ২০১৮ এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কলসেন্টারের কার্যক্রম শুরু হবে। ভোক্তারা যেন ক্ষতির প্রতিকার পান, তা নিশ্চিত করতে সেন্টারের কর্মীরা সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করবে।

কলসেন্টারে অভিযোগ করতে চাইলে অথবা কলসেন্টারের ডাটা সংগ্রহ করতে, বা যে কোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ:
ই মেইল: [email protected]
ফোন: ০১৯১৪ ৩৮৭৬০৮
অফিস: ১৯/১ পান্থপথ, কনকর্ড টাওয়ার, ঢাকা ১২০৫