দালালমুক্ত হাসপাতাল ও নিরাপদ চিকিৎসার দাবিতে মানববন্ধন

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা সিন্ডিকেট ও দালালমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে নিরাপদ হাসপাতাল চাই (নিহাচ) নামের একটি সংগঠন। একইসঙ্গে চলমান ‘অপচিকিৎসা’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান সংগঠনটির নেতারা।

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও স্বাস্থ্যসেবার মৌলিক অধিকার আজও নিশ্চিত হয়নি। এশিয়াসহ প্রায় ৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণকেই সব থেকে বেশি চিকিৎসা খরচ নিজেদের বহন করতে হয়, যার পরিমাণ ৭৪ থেকে ৮০ শতাংশ। জায়গা-জমি বিক্রি করে, সঞ্চয় ভেঙে, ঋণ করে চিকিৎসার খরচ জোগাতে লাখ লাখ মানুষ প্রতি বছর দরিদ্র হচ্ছে। এরপরও মানুষ তার নিরাপদ চিকিৎসার অধিকার পাচ্ছে না। নারী, রোগী ও তার স্বজন থেকে শুরু করে, নারী চিকিৎসকরাও যৌন নিপীড়নের শিকার হন। সহকর্মী, ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে দালালদের হাতে সবাই এখন অনিরাপদ। সরকারি হাসপাতালগুলো দালালদের একটি নিরাপদ ব্যবসাস্থলে পরিণত হয়েছে।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের একটি বিস্তৃত ও শক্তিশালী স্বাস্থ্য অবকাঠামো থাকলেও তার সেবার মান ভঙ্গুর। কমিনিউনিটি ক্লিনিক থেকে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা এতটাই নাজুক, যে কোনো গুরুতর অবস্থায় রোগীর সাপোর্ট দেওয়ার সক্ষমতা তাদের নেই। এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, সিটিস্ক্যান থেকে শুরু করে প্যাথলজির মতো জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে। যদিওবা কোনো যন্ত্র নতুন যুক্ত হয়, তবে সেটি উদ্বোধনের অজুহাতে পড়ে থাকে বছরের পর বছর। আর ফায়দা লুটে বেসরকারি হাসপাতাল।

সুচিকিৎসা ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ সময় বক্তারা পাঁচ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- দালালমুক্ত ও রোগীবান্ধব হাসপাতাল গড়তে হবে। প্রতিটি জেলা সদরে আইসিইউ, সিসিইউ চালুসহ আসন বৃদ্ধি করতে হবে। রোগী, স্বজন ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও যৌন নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়াও, দালালমুক্ত হাসপাতাল গড়ার দাবি জানান বক্তারা। তারা বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ট্রলি, বেড, হুইলচেয়ার বাণিজ্য ঠেকাতে হবে। আয়া, বুয়া, ক্লিনার সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে। রোগীকে প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে টেস্ট করতে বাধ্য করানো হয়। এসব ক্লিনিকের এজেন্ট, চিকিৎসক ও স্বত্ত্বাধিকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিটি জেলা সদরে আইসিইউ, সিসিইউ চালুসহ জেনারেল শয্যা বাড়াতে হবে। গুরুতর রোগীদের জন্য জেলা সদরে সব সেবা ব্যবস্থা থাকতে হবে। নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের সাধারণ অপারেশন ও সেবাতে দক্ষ করে তুলতে হবে।

মানববন্ধনে এফ এ শাহেদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী, ন্যাশনাল ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির সভাপতি রাহাত হুসাইন, শাহরিয়ার সোহাগ লেখক প্রমুখ।