জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ফ্রান্সে প্রবল বিক্ষোভ; নিহত ১

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ফ্রান্সজুড়ে সড়ক অবরোধ চলাকালে এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। শনিবার সড়ক অবরোধের এই কর্মসূচিতে অন্তত দুই লাখ ৮০ হাজার মানুষ অংশ নেয়। কর্মসূচি চলাকালে একজন বিক্ষোভকারী গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্তোফ কাস্তানেখ। এ ছাড়া, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২২৭ জন এবং ৫২ জনকে আটক করা হয়েছে।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার সেখানে ‘পরিষ্কার গাড়ি ও জ্বালানি’ প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে তেলের ওপর হাইড্রোকার্বন ট্যাক্স বাড়িয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ নাগরিকরা তৃণমূল পর্যায়ে জ্বালানির বাড়তি মূল্য বিরোধী আন্দোলন ‘ইয়োলো ভেস্ট’ শুরু করেছেন। ইয়োলো ভেস্টের বিক্ষোভকারীরা সড়ক পথগুলো অবরোধ করার চেষ্টা করে এবং জ্বালানি ডিপোগুলোতে সর্বসাধারণকে প্রবেশে বাধা দেয়।

গতকাল ১৭ নভেম্বর ২০১৮ ফ্রান্সের প্রায় দুই হাজার স্থানে হলুদ জ্যাকেট পরিহিত প্রায় এক লাখ ২০ হাজার বিক্ষোভকারী সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গরীব মানুষের দিকে ম্যাক্রোঁর কোনো দৃষ্টি নেই। আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে কার্যত মহাসড়ক অচল করে ফেলেন। এর মধ্যে গাড়িচাপায় এক আন্দোলনকারী নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। জানা গেছে, গত ১২ মাসে ফ্রান্সে ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। দেশটির বেশিরভাগ গাড়িতে ডিজেল ব্যবহার করা হয়।

ফ্রান্সে বেকারত্বের হার বর্তমানে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসে ৫ শতাংশ ও জার্মানিতে ৪ শতাংশ। অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে গত বছর চমক দিয়ে জয় পাওয়া প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েয়েল ম্যাক্রোঁ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে তার সরকার দেশটির সংসদের আসন সংখ্যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে।

ঋণ জর্জরিত রেল খাতকে ঢেলে সাজানোর জন্য সরকারি রেল কোম্পানি এসএনসিএফ-এর সংস্কার করা হচ্ছে। বর্তমান আইনে এসএনসিএফের কর্মীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন বৃদ্ধি, আগেভাগে অবসরে যাওয়াসহ বছরে ২৮ দিনের সবেতন ছুটির সুযোগ পেতেন। স্থায়ী চাকুরিরতদের বরখাস্তের নিয়ম ছিল না; কর্মীদের নিকটাত্মীয়দের জন্য বিনা ভাড়ায় রেল ভ্রমণের সুযোগ ছিল। ম্যাক্রোঁর সরকার এসব সুবিধা বাতিল করতে শ্রম আইনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলে গত মে দিবসে ফ্রান্সজুড়ে ব্যাপক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে তখন ২০০ লোক গ্রেপ্তার হন।