১১৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর

।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে বাজার তদারকির দায়িত্ব পালন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ২৭ নভেম্বর তারা বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের নেতৃত্বে ১১৪টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭ লাখ ২৫ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করেছে। ৩৬টি বাজার তদারকি ও ৭টি অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে এ জরিমানা করা হয়।

অধিদপ্তরে দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়, পণ্যের মোড়কে এমআরপি লেখা না থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়ের অপরাধে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। সংশ্লিষ্ট ৭ জন অভিযোগকারীকে জরিমানার ২৫ শতাংশ হিসেবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান করে অধিদপ্তর। আইন অনুযায়ী কোনো ভোক্তা যদি পণ্য বা সেবা কিনে প্রতারিত হন তাহলে তিনি অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অভিযোগ প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে যে জরিমানা করা হয় ভোক্তা তার ২৫ শতাংশ পেয়ে থাকেন।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানায়, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরীর শেরে বাংলা নগর, কাফরুল ও শাহজাহানপুর এলাকায় বাজার তদারকি পরিচালনা করা হয়। বাজার তদারকিকালে পণ্যের মোড়কে এমআরপি লেখা না থাকার অপরাধে ইমরান মেডিসিনকে ১০ হাজার টাকা, রিসতা জেনালের স্টোরকে ২০ হাজার টাকা, লিমা ফার্মেসীকে ৫ হাজার টাকা, ফুড ল্যান্ডকে ১০ হাজার টাকা ও মিনি মার্টকে ২০ হাজার টাকা; অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরির অপরাধে বিসমিল্লাহ হোটেলকে ২৫ হাজার টাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির অপরাধে বিক্রমপুর সুইটস এন্ড বেকারিকে এক হাজার টাকা ও কাজী কিচেনকে ১০ হাজার টাকা; মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রির অপরাধে হক ফার্মাকে ১০ হাজার টাকা, ভাই ভাই ফার্মেসীকে ১০ হাজার টাকা, হাইটেক কন্টিনেন্টাল হসপিটাল ফার্মেসীকে ৪০ হাজার টাকা, লাবণ্য ফার্মেসীকে ১৫ হাজার টাকা, মুত্তকী ফার্মাকে ২৫ হাজার টাকা এবং ওজনে কারচুপির অপরাধে শিফনের মাংসের দোকানকে এক হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

ঢাকা ছাড়াও দেশব্যাপী ৩৩টি জেলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি, পণ্যের মোড়কে এমআরপি লেখা না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়, খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা, ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রের কারচুপি, ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়, সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কার্য, অবহেলা ইত্যাদি দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ইত্যাদি ঘটানো এবং পণ্যের মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে ৯৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

এসব জেলার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফরিদপুর, ফেনী, খুলনা, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, যশোর, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, গাজীপুর, ঝিনাইদহ, ভোলা, দিনাজপুর, কুমিল্লা, রংপুর, টাঙ্গাইল, হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, নড়াইল, নেত্রকোণা, জামালপুর, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নীলফামারী, পটুয়াখালী ও মৌলভীবাজার। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান ও জেলা পুলিশ, সিভিল সার্জন, মৎস্য কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, বাজার কর্মকর্তা, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিনিধি এবং কনজুমারস এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ক্যাব) এসব তদারকি কার্যে সহায়তা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, ভোক্তা যদি কোনো কিছু ক্রয় করে ক্ষতি বা প্রতারণার শিকার হন, তাহলে ক্যাব-এর ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি কলসেন্টার-এর সহায়তায় অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। ফোন : ০১৯৭৭০০৮০৭১, ০১৯৭৭০০৮০৭২। ই মেইল : [email protected]