ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাবে ‘পেরিলা’

দেশে নতুন তেলফসল ‘গোল্ডেন পেরিলা’ মানসম্মত ভোজ্যতেলের ফলন বাড়াতে সক্ষম বলেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। দীর্ঘদিনের গবেষণায় পেরিলাকে দেশীয় আবহাওয়ায় অভিযোজন করাতে সক্ষম হয়েছেন এ গবেষক দল।

ক্রমাগত বাড়ছে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা। কিন্তু দরকারের চেয়ে উৎপাদন কম হওয়ায় বাড়ছে আমদানি খরচ। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. জাহিদুল আমিন ও কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ঝিনাইদহের প্রশিক্ষক কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, বাংলাদেশে মোট ভোজ্যতেলের চাহিদা ৫১.২৭ লাখ টন, যার মধ্যে ৪৬.২১ লাখ টন আমদানি করতে হয়, যার মূল্য ৩.২০ বিলিয়ন ডলার, যা টাকায় ২৭ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা।

এআইএস এর তথ্য মতে, আমাদের দেশে সরিষা, চীনাবাদাম, তিল, তিসি, সয়াবিন ও সূর্যমুখীসহ বিভিন্ন তেলফসলের চাষ হয়ে থাকে। সরিষা, তিল এবং সূর্যমুখী এগুলো থেকেই সাধারণত তেল বানানো হয়। বর্তমানে আবাদি জমির মাত্র ৪ ভাগে তেল ফসলের আবাদ হয়। মোট ৪.৪৪ লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়, যা থেকে ৬.৫ লাখ টন সরিষা এবং সরিষা থেকে ২.৫০ লাখ টন তেল উৎপন্ন হয়।

সাউ পেরিলা-১ (গোল্ডেন পেরিলা বিডি) বাংলাদেশে অভিযোজিত পেরিলার একটি জাত।বাংলাদেশে জাতটি সম্প্রসারণের জন্য কাজ করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. এইচ এম এম তারিক হাসান, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. আ ফ ম জামালউদ্দিন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ২৭তম বিসিএস ক্যাডারের অফিসার মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম মজুমদার।

২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি ফসলটি সাউ পেরিলা-১ (গোল্ডেন পেরিলা বিডি) জাত হিসেবে নামকরণপূর্বক কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ড অবমুক্ত করে।  এ ফসলটির বিশেষত্ব হলো এর বীজ থেকে পাওয়া তেলে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ লিনোলিনিক এসিড (ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের প্রধান উৎস) যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। এর বীজ থেকে শতকরা ৪০ ভাগ তেল আহরণ করা যায়, যার প্রায় ৯১ ভাগ অসম্পৃক্ত ফ্যাটিএসিড।

ইতিমধ্যে দেশের ১২টি জেলায় এ ফসলটি পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করা হচ্ছে এবং এর বাম্পার ফলন আশা করা যাচ্ছে। এর তেল শরীরের জন্য বেশ উপকারী বিশেষত হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও ত্বকসহ ডায়াবেটিস রোগে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।