চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর হচ্ছে সরকার

বোরোর ভরা মৌসুমেও চালের দামে প্রভাব পড়েনি। প্রতি কেজি মোটা চাল কিনতে আগের মতোই ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাকে। ধান ও চাল নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা রোধে কঠোর হচ্ছে সরকার।এ সংক্রান্ত বিধিবিধানের কঠোর বাস্তবায়ন চায় খাদ্য মন্ত্রণালয়। অভিযান পরিচালনা করা দফতরগুলোকে খাদ্যশস্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি এক নির্দেশনার চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবকে।মজুত সংক্রান্ত বিধিবিধানের কঠোর বাস্তবায়ন, অভিযান পরিচালনা ও বাজার তদারকি কার্যক্রম জোরদারের জন্য খাদ্য অধিদফতর ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

গত এক সপ্তাহে চিকন (সরু), মাঝারি ও মোটা, সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহে চিকন চালের দাম ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা কেজিতে। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম ৬ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৬ ও মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দাম এক সপ্তাহে ২ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজিতে এমন তথ্য দিয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরে খাদ্যশস্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের আওতায় গঠিত মনিটরিং টিমের বিভিন্ন সময়ে দেয়া নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।

মাঠ পর্যায়ে খাদ্যশস্যের অবৈধ মজুত নিয়ন্ত্রণ ও বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মনিটরিং কমিটির কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের দেশের সব জেলায় নিয়মিত অভিযান ও সংশ্লিষ্ট আইনের আওতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, চালকল মালিক পর্যায়ে দৈনিক ৮ ঘণ্টার ছাঁটাই-ক্ষমতা ধরে পাক্ষিক ছাঁটাই-ক্ষমতার তিন গুণ সর্বোচ্চ ৩০ দিন মজুতের বিধান রাখা হয়। এই এসআরওতে দেয়া নির্দেশনা মিলাররা যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে কি না- তা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে এবং নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইন/বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, ‘মনিটরিংটা চলমান প্রক্রিয়া। এজন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিই। সেজন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।’‘চালের দাম যেভাবে বেড়েছে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দাম আর সেভাবে কমবে না। গত বছর কৃষি মন্ত্রণালয় বলেছিল, জুন মাস পর্যন্ত চাহিদা পূরণ করে আরও উদ্বৃত্ত থাকবে। সেই কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, আম্ফান ও উপর্যুপরি বন্যায় আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা পূরণ হয়নি। তবে এবার উৎপাদন বাড়বে।’

নাজমানারা খানুম আরও বলেন, ‘বিধিবিধানগুলো পালন হয়, তবে মাঝে মাঝে গাফিলতি হয়। এজন্য আমরা চিঠি দিয়ে মনে করিয়ে দিই। মনে করিয়ে দিলে তারা একটু নড়েচড়ে বসবেন, কাজটা ঠিক মতো হয়।’