ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: পটুয়াখালী চক্ষু হাসপাতালে ডাক্তারের নামে রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট নেওয়া হলেও মূলত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টরা রোগী দেখে চিকিৎসাপত্র দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বেশ কয়েকবার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও স্থায়ী প্রতিকার মিলছে না।
পটুয়াখালী পৌর শহরের কাজীপাড়া এলাকায় হাসপাতালটির অবস্থান। গত ২৬ সেপ্টেম্বর শহরের সবুজবাগের ৯ নম্বর লেনের বাসিন্দা জুনায়েদ আহমেদ নাসিম (২২) নামে এক যুবক পটুয়াখালী চক্ষু হাসপাতালে যান। দুপুর ২টার দিকে ২০০ টাকা কাউন্টারে জমা দিয়ে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করেন। ভেতরে থাকা ব্যক্তির আচরণ কিছুটা বিব্রতকর হলেও ডাক্তার জাহাঙ্গীরের সই করা চিকিৎসাপত্র নিয়ে বের হন।
হাসপাতালের সামনে থাকা ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গেলে চিকিৎসাপত্র দেখে ফার্মেসি কর্তৃপক্ষ জানায়, চিকিৎসাপত্রটি যিনি দিয়েছেন তিনি আসলে কোনো ডাক্তারই না। তিনি মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট তার নাম জাহাঙ্গীর আলম। আর এরপরই ভুক্তভোগী ওই যুবক আবারও হাসপাতালে গিয়ে কেন তার সঙ্গে প্রতারণা করা হলো সে বিষয়ে জানতে চান। এতেই স্টাফরা তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর ওই যুবককে ডাক্তারের ভিজিট বাবদ নেওয়া ২০০ টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নাসিম বলেন, চোখের মতো একটি সেনসিটিভ অর্গানের চিকিৎসার নামে তারা যা করছে তা শুধুই প্রতারণা। আমি এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবো।
একইদিন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কপুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা তহমিনা বেগমও চোখের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসার জন্য ডাক্তার দেখাতে পটুয়াখালীতে আসেন। পটুয়াখালী চক্ষু হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর জন্য নির্দিষ্ট ফি দিয়ে টিকিট কাটার পর তাকেও নেওয়া হয় ডাক্তারের চেম্বারে। এরপর কথিত ওই ডাক্তার তহমিনাকে চিকিৎসাপত্র দেন। তবে পরে তিনিও জানতে পারেন ডাক্তারের কথা বলে যাকে দেখানো হয়েছে তিনি মূলত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট।
অভিযুক্ত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি রোগী দেখতে চাইনি। তবে কাউন্টার থেকে জোর করে আমার রুমে রোগী পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা সবাই নিজেরা নিজেরা। বিষয়টি ওভার লুক করে যান। নিউজ টিউজ করার দরকার নাই।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এমনটি ঘটলে কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
হাসপাতালটির পরিচালক শহিদুল ইসলাম এর আগেও রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে একাধিকবার জেল-জরিমানার শিকার হয়েছেন। তবে জেলখানা থেকে বের হয়ে আবারও তিনি প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।