রাইডারদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

রাইড শেয়ার, সার্ভিস ডেলিভারিসহ অ্যাপভিত্তিক গাড়ি চালক ও শ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে রাইড শেয়ার এবং সার্ভিস ডেলিভারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন।

শুক্রবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ইউনিয়ন আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— রাইড শেয়ার কোম্পানির কমিশন ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা ও বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা; দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত রাইড শেয়ার ও সার্ভিস ডেলিভারি ওয়ার্কারদের বিনামূল্যে চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং নিহত হলে আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে প্রয়োজনীয় তহবিল গঠন করা ও কোম্পানির খরচে জীবন ও স্বাস্থ্য বিমার ব্যবস্থা করা; একপাক্ষিক অভিযোগে অ্যাপ সংযোগ বন্ধ করা যাবে না। অভিযোগ নিরসনে শ্রমিক প্রতিনিধির সমন্বয়ে আরবিট্রেশনের পদ্ধতি চালু করা এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানি বন্ধ করা। মোড়ে মোড়ে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০২০ সালের বিআরটিএ পরিসংখ্যান অনুসারে ঢাকায় মোটরসাইকেল (এক বছরেই) নিবন্ধিত হয়েছে ৭৮ হাজার ৫৫১টি। গত আট মাসে (আগস্ট ২০২১) মোটরসাইকেল নিবন্ধিত হয়েছে ৫৪ হাজার ১৩৯টি। অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং ও সার্ভিস ডেলিভারির কারণে এই সংখ্যা বাড়ছে। এ খাতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র, কিংবা স্বাধীনচেতা উচ্চ শিক্ষিত মানুষও যুক্ত রয়েছেন। করোনাকালে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি হারানো মানুষ এই পেশার সাথে যুক্ত হচ্ছেন। ধারণা করা হয়, শুধু ঢাকা শহরে ১০ লক্ষাধিক মানুষ রাইড শেয়ার ও সার্ভিস ডেলিভারি পেশার সাথে যুক্ত।

তারা বলেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এ খাতকে বিআরটিএর নিবন্ধনের আওতায় আনা হলেও শ্রম আইনে এখনো পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। রাইড শেয়ার পেশায় প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ সম্পূর্ণটা সংশ্লিষ্ট চালককে বহন করতে হয়। অ্যাপ কোম্পানিগুলো শুধু মধ্যস্থতা করার জন্য ঘোষিত ২৫ শতাংশ আর বিভিন্ন কৌশলে ৩০-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন আদায় করে। সারাদিন রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, জীবন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালিয়ে উপার্জিত অর্থ থেকে ‘দালালি’ খরচ বাবদ ৩০-৩৫ শতাংশ টাকা আদায় করা কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না। এই খাতে কর্মরত চালকদের দিন-রাত নির্বিশেষে রাস্তায় থাকতে হয়। ফলে পেশাগত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি। অথচ দুর্ঘটনায় ক্ষতি হলে তাদের চিকিৎসা ব্যয় বা ক্ষতিপূরণ প্রদানের কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি দুর্ঘটনায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যাটি হারিয়ে গেলেও তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব মো. রিয়াজ প্রমুখ।