অননুমোদিত দুগ্ধজাত পণ্যের সরবরাহকারীদের তালিকা তলব করেছে উচ্চ আদালত

ঢাকা, ২৩ জুন রোববারঃ লাইসেন্সবিহীন কতগুলো কোম্পানি ঢাকায় দুগ্ধজাত পণ্য বাজারজাত করেছে তার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই তালিকা দাখিল করতে বলেছেন হাইকোর্ট। আজ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশনা প্রদান করেছেন। জাতীয় মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা, বিএসটিআই‘কে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। আগামী ১৫ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের গবেষণায় উঠে আসা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে, ‘গাভীর দুধ ও দইয়ে অ্যান্টিবায়োটিক, কীটনাশক, সিসা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাভীর দুধে (প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া) সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে বিভিন্ন অণুজীবও।

প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আসায় পরদিন ১১ ফেব্রুয়ারি, স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে গাভীর দুধ (প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া) ও বাজারের প্যাকেটজাত দুধ, দই এবং গো-খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করে তাতে কি পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক, অ্যান্টিবায়োটিক, সীসা, রাসায়নিক মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর তা নিরূপণে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ অন্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গরুর খোলা দুধে অণুজীবের সহনীয় মাত্রা সর্বোচ্চ ৪ থাকার কথা থাকলেও পাওয়া গেছে ৭.৬৬ পর্যন্ত।

এছাড়া দুধের সীসা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) প্রধান ডা. শাহনীলা ফেরদৌসীকে প্রতিবেদন নিয়ে কোনো প্রকার ডিস্টার্ব (বিরক্ত) না করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ আদালতের নির্দেশ মতে, ৩০৫টি নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে দুটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিম্নমানের বলে প্রতিবেদন দিয়েছে বিএসটিআই। আর নমুনা সংগ্রহ করে ৫ জায়গায় পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদন দিতে একমাস সময় চেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। উচ্চ আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে জানতে চেয়েছেন, মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার বিএসটিআইকে কে দিয়েছে এবং লাইসেন্স না নিয়ে কিভাবে বাজারে দুধ সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানগুলো?