কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে গেল পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেল পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়েছে। কয়লা সংকটে গত ২৫ মে একটি ইউনিট বন্ধ হলেও অবশিষ্ট ইউনিট আজ বন্ধ হয়ে গেল।

এতে পটুয়াখালীসহ সারাদেশে ভয়াবহ লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সমগ্র বরিশাল, খুলনা ও ঢাকার বেশ কিছু অংশের বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্য উৎস‌ ছিল।

এদিকে পটুয়াখালীতে লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে রাতের বেলা চার থেকে পাঁচ বার লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ১৩ হাজার থেকে সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১২ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা ৩ হাজার ৪৪০ মেগাওয়াটের বিপরীতে গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করছে। আর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৭০০ থেকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে। এতে প্রতিদিন ১২ হাজার টনের বেশি কয়লা পোড়ানো হচ্ছে।

জানা যায় যে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান সিএমসির মাধ্যমে এতদিন পরিচালনা হয়ে আসছিল। পরে দুই প্রতিষ্ঠানের সমান মালিকানায় বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। বিগত দিনে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ছয় মাস বাকিতে কয়লা দিয়েছে সিএমসি। পরে আরও তিন মাসের বকেয়াসহ নয় মাসে এই বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে অন্তত ৩৯ কোটি ডলার। এই বকেয়া ডলার সংকটের কারণে পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যে কারণে চীন থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ডলার সংকট মেটাতে কয়েক দফা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেও সমাধানে আসতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।

বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ ওজোপাডিকো পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, পটুয়াখালী জেলায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১৩ ইউনিটের বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় সেখানে আমরা প্রতিদিন গড়ে ১০ ইউনিটের মত বিদ্যুৎ পেয়ে থাকি এ জন্য লোডশেডিং হচ্ছে। চাহিদা মত বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে আর লোডশেডিং হবে না।

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব বলেন, কয়লা সংকটের কারণে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। তবে ডলার সংকটের কারণে এই কয়লার সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়লা আনার জন্য এলসি খোলা হয়েছে। আশা করছি এই মাসের শেষের দিকে কয়লাবাহী প্রথম জাহাজ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এসে পৌঁছাবে। তখন আবার পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হবে।

Related posts:

প্রতিটি ঘরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে সরকার প্রস্তুতি নিয়েছেঃ প্রতিমন্ত্রী
জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করবো: প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের ২৫ শতাংশ সাশ্রয়ের নির্দেশ
নিজস্ব খনিজ সম্পদ আহরণ ও উত্তোলনে সুনির্দিষ্ট ও স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বান প্রতিমন্ত্র...
রমজানে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর
‘চলতি বছরে বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে সমস্যা হবে না’
৫৪ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত
১০ ঘণ্টা মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে
 ফের বাড়লো এলপিজির দাম
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কাজে পেট্রোবাংলাকে শুল্ক-ভ্যাট ছাড়