ভাসানচরের সুবিধাদি দেখে সন্তুষ্ট জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের সার্বিক সুবিধাাদ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের দুইটি প্রতিনিধিদল। ভাসানচরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন শেষে সোমবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সেখানে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) অফিস কক্ষে এক আলোচনা সভায় তারা এ সন্তোষ প্রকাশ করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাসানচরের ক্যাম্প ইনচার্জ নওশের ইবনে হালিম।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) অফিসে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনা সভা হয়। সভায় ৭ জন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রতিনিধি এবং অতিরিক্ত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। সভায় তারা ভাসানচরের সার্বিক বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

নওশের ইবনে হালিম আরও বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কর্মকর্তারা ২টি দলে ভাগ হয়ে ভাসানচরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। সেগুলো হলো ২০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল, কবরস্থান এরিয়া, হেরা সুপার সপ, ওয়্যারহাউজ ১, ২ ও ৩, নবনির্মিতব্য ইউএন ভবন এবং সংলগ্ন শেল্টার -১৪।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম খুব দ্রুত শুরু হবে উল্লেখ করে নওশের ইবনে হালিম বলেন, সভায় ভাসানচর ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ লজিস্টিক সাপোর্টের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। তারা খুব দ্রুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু করবে। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বানৌজা ডলফিন ভাসানচর আগমন করে। জাহাজে জাতিসংঘের ২৫ জনের প্রতিনিধিদল ও বিভিন্ন এনজিও’র প্রতিনিধিরা ছিলেন। এ ছাড়াও WFP ও UNHCR এর ৪টি গাড়ি ও মালামাল ছিল।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারে চাপ কমাতে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত বছরের ডিসেম্বরে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়া শুরু হয়। এ পর্যন্ত ছয় দফায় মিয়ানমারের ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। সরকার নিজস্ব অর্থায়ন এবং দেশি-বিদেশি সাহায্য সংস্থাকে যুক্ত করে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়ে শুরু থেকেই জাতিসংঘ বিরোধিতা করেছে। ভাসানচরকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেছে তারা। তবে সরকার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের কাজ শুরু করে অব্যাহত রাখার একপর্যায়ে সেখানে একটি কারিগরিদল পাঠায় জাতিসংঘ।

এ ছাড়া ওআইসি, ঢাকায় পশ্চিমাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের পর ইউএনএইচসিআর এর দুই সহকারী হাইকমিশনার ভাসানচর সফর করেন। এসব সফরের পর জাতিসংঘের কারিগরি দলসহ প্রতিনিধিদল ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখায়।