ভারতের কারাগার থেকে ২২ বাংলাদেশির মুক্তি

মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি:

ভারতের আসামের বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে (কারাগারে) দীর্ঘ কারাভোগের পর দেশে ফিরেছেন ২২ বাংলাদেশি নাগরিক। তারা পটুয়াখালী, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, নওগাঁসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দা।

শনিবার বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দরে বিএসএফ ও ভারতীয় সীমান্ত পুলিশ এসব বন্দিদের বিজিবি ও বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

ফেরত আসা বাংলাদেশিরা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। পরে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় তাদের স্থান হয় বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে।

হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন- শেওলা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ মো. মাসুদুজ্জামান, ৫২ বিজিবির বড়গ্রাম কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার বাবুল খান, ভারত সীমান্ত পুলিশের আইপিএস অফিসার রেণুকান্ত শীতল কুমার, সুতারকান্দি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ শ্যামেন্দ্র চক্রবর্তী, বিএসএফের সুতারকান্দি কোম্পানি কমান্ডার সমির দাস প্রমুখ।

দেশে ফেরা বাংলাদেশিরা হচ্ছেন- বড়লেখার কয়েছ উদ্দিন তালুকদার, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর শহিদুল ইসলাম, রউমারীর আশিক মিয়া ও মো. সাইজুদ্দিন, দিনাজপুরের খানশামার জয় চন্দ্র শর্মা, শেরপুর সদরের সাব্বির মিয়া, চাঁদপুরের মতলব উপজেলার লিটন গাজি, পটুয়াখালীর গলাচিপার আলম হাওলাদার, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আব্দুল গণি, রাজশাহীর তানুরের আছলম আলী, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার আইনুল হক, টাঙ্গাইলের সখিপুরের অমূল্য বর্মন, খুলনার আব্দুল হাকিম, মাদারীপুরের জুয়েল হাওলাদার, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার শরিফুদ্দিন মিয়া, সুনামগঞ্জের ছাতকের নাসির আলী ও শাহিনুর, সিলেটের কানাইঘাটের সেলিম আহমদ, গোলাপগঞ্জের রুহান আহমদ, ঢাকার জামাল উদ্দিন, কুষ্টিয়ার কুমারখালির রাজু আহমদ ও নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার ফিরোজ মিয়া।

বিয়ানীবাজার শেওলা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ মো. মাসুদুজ্জামান জানান, ভারত থেকে প্রত্যাবাসনকারী ২২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বিএসএফ ও ভারতীয় সীমান্ত পুলিশের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ সহ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও আইনগত সব কার্যক্রম সম্পন্নের পর প্রত্যাবর্তনকারীদের আগে থেকেই অপেক্ষমান অভিভাবক ও বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা অমলেন্দু কুমার দাশ জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে উভয়দেশের বন্দি প্রত্যাবাসনে কাজ করছেন। স্বেচ্ছায় বিনা পারিশ্রমিকে অসহায় মানুষকে মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন। ভারতের আসাম রাজ্যের পাঁচটি ও মেঘালয় রাজ্যের দু’টি জেল থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ২৫০ বাংলাদেশিকে মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এই মানবিক কার্যক্রমের সম্মুখযোদ্ধা আসামের গৌহাটিস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার ড. শাহ মোহাম্মদ তানভীর মনসুর। তার বলিষ্ট ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ভারতের কারাগারে অসহায়ভাবে পড়ে থাকা মানুষগুলোকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।