শিশু আইন প্রয়োগে হতে হবে যত্নশীল, নির্দেশ হাইকোর্টের

শিশু আদালতের বিচারকদের শিশু আইনের বিধানাবলী প্রতিপালনে আরো যত্নশীল হতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই আইন প্রয়োগে বিচারকদেরকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। উচ্চ আদালতের এই নির্দেশনা প্রতিপালনে দেশের ১০২টি শিশু আদালতের বিচারকদের কাছে ডাকযোগে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এদিকে শিশু আইনের কার্যকর প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিচারক, পুলিশ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তাদের আরও প্রশিক্ষণের চিন্তাভাবনা চলছে।

আইনের সংঘাতে আসা শিশুর জামিন বিবেচনা না করে কারাগারে পাঠানো, রিমান্ড ও দণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা সময়ে লঙ্ঘিত হচ্ছে শিশু আইন। অধস্তন আদালতের এসব আদেশ বা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন শিশুরা। এমতাবস্থায় মামলার নথি পর্যালোচনা করে শিশু আইন লঙ্ঘনের স্পষ্টত প্রমাণ পাচ্ছেন উচ্চ আদালতের বিচারকরা। সম্প্রতি বিস্ফোরক আইনের মামলায় এক শিশুকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদানের ঘটনায় যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাহমুদা খাতুনকে শোকজ করে হাইকোর্ট।

শিশু আইনে শিশুকে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান না থাকলেও এ ধরনের দণ্ড দেওয়ায় ঐ বিচারককে চার সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। বরিশালের বাকেরগঞ্জে ধর্ষণের মামলায় গত বছরের অক্টোবর মাসে চার শিশুকে জামিন না দিয়ে পাঠানো হয় যশোরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে। এ ঘটনায় টিভি মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ৯ অক্টোবর রাতে বসে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রাতেই ঐ দ্বৈত বেঞ্চ শিশুদের জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিলে রাতেই শিশুরা সেখান থেকে মুক্তি পান।

আইনানুযায়ী শিশুদের বিচারের যে নীতি রয়েছে তা যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। ইতিপূর্বে হাইকোর্টের বিভিন্ন দ্বৈত বেঞ্চ থেকে রায় দিয়ে শিশু আইন কঠোরভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিশু আইন ঠিকভাবে অনুসরন করা হচ্ছে না। এ কারণে দেশের সকল শিশু আদালতের বিচারকদের আইনের সংঘাতে আসা শিশুদের বিচারের ক্ষেত্রে শিশু আইন প্রয়োগে অধিক যত্নশীল হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।

সুত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক

Leave a Comment