শিক্ষা খাতে বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব

বৃহস্পতিবার গণসাক্ষরতা অভিযানের আয়োজনে ‘করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ২০২১-২২ অর্থবছরে করোনায় বিপর্যস্ত বাজেট কেমন হওয়া উচিৎ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে শিক্ষা খাতকে গুরুত্ব বিবেচনায় দেশের মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, শিক্ষাবিদ কাজী খলিকুজ্জামান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, মঞ্জরুল আহমেদ, শিক্ষক নেতা কাজী ফারুক।

নতুন বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের সার্বজনীন উপবৃত্তি, স্কুল ফিডিং, ফ্রি-ইন্টারনেট সুবিধা ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত ছাড়াও ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের অর্থ ব্যয়ে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, যথাযথ ব্যবহার করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

আলোচনায় বলা হয়, সরকার শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে টিভি, অনলাইন, রেডিওর মাধ্যমে ক্লাস চালু করলেও তা সর্বস্তরে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে অনেকে পিছিয়ে পড়েছে। এর ফলে বাল্যবিবাহ, পরিবারে অশান্তি তৈরি হয়েছে । এছাড়া করোনার মধ্যে সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন পেলেও নন-এমপিওরা বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ কারণে অনেকে পেশা পরিবর্তন করেছেন। আগামী বাজেটে অর্থনীতি, কৃষি, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোকে গুরুত্ব দেয়া হলেও শিক্ষাকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এটিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার্থীদের সার্বজনীন উপবৃত্তি, স্কুল ফিডিং, ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে।

দেশে সাক্ষরতার হার নিয়ে নানান সমস্যা রয়েছে। সাক্ষরতা সঠিক ব্যাখ্যা তৈরি করা প্রয়োজন। সাক্ষরতার সংখ্যা নিয়েও নানা বির্তক রয়েছে। সারা দেশে একসঙ্গে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুলে ধাপে ধাপে খুলে দেয়া একটি ভালো প্রস্তাব, সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।

এবং ফ্রি ইন্টারনেটের ব্যাপারে বলেন, ফ্রি ইন্টারনেট দিয়ে কি বিনোদন করবে নাকি শিক্ষার কাজে ব্যবহার করবে সেটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আমরা কোথায়, কাকে ফ্রি দেব তা আগে সুনিশ্চিত হতে হবে। ফ্রি ইন্টারনেট পেয়ে নাটক-সিনেমা দেখবে তা হতে পারে না।’

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘করোনা মাহামারিকে সামনে রেখে শিক্ষার কী ধরনের বাজেট হওয়া উচিত তা আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মাঠপর্যায়ে বাজেট সংক্রান্ত সংলাপ ও আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি ও দাবির বিষয়টি জানার চেষ্টা করা হয়েছে। তার আলোকে আগামী বাজেটে মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।’

শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে ক্ষতিপূরণ বাজেট নির্ধারণ করতে হবে। শুধু বরাদ্দ বাড়ালে চলবে না। বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা করতে হবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বিশেষ বাজেট বরাদ্দের আহ্বান জানান ড. কাজী খলিকুজ্জামান।