পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপায়ীদের জরিমানা করার ক্ষমতা চায় পুলিশ

পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে কেউ ধূমপান করলে পুলিশ যেন জরিমানা করতে পারে সেই ক্ষমতা দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে। এরসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ ও সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্তে ধীরে ধীরে ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আলোচকরা।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) ডেভলপমেন্ট অ্যাক্টিভিটিজ অব সোসাইটি (ডাস) আয়োজিত ‘গণপরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে পুলিশের ভূমিকা’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।

ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্টিভিটিস অব সোসাইটি’র তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উপদেষ্টা মো. আমিনুল ইসলাম বকুলের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু।

শামসুল হক টুকু বলেন, পরিবহন সেক্টরে ধূমপায়ীদের বিরত রাখা এটা অত্যন্ত একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ১৭ কোটি মানুষের ১৭ কোটি চিন্তাভাবনাকে একত্রিত করে ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণে শুধু আইন প্রয়োগ বা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব নয়, দায়িত্ব দেশের ১৭ কোটি মানুষের, যারা বিভিন্নভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন তাদেরও। জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব থাকতে হবে। তরুণ সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। মাদকমুক্ত, ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে প্রথমেই আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটি হওয়া দরকার। শুধু সরকারের সিদ্ধান্ত না, শুধু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে তার সিদ্ধান্ত নয়; বাংলাদেশে যেসব সেবামূলক সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন কাজ করে, প্রত্যেকের দায়িত্ব যুব সমাজ ও পরিবেশ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা।

সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, তামাক মানুষের জীবনে ক্ষতিকর- এটা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। যারা ধূমপান করেন, তারাও এই ধূমপান বা তামাক থেকে বের হয়ে আসতে চান। প্রধানমন্ত্রী একটা টার্গেট দিয়েছেন- ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করবেন। সেই প্রক্রিয়ায় প্রতি বাজেটে তামাকের দাম বৃদ্ধি করে আস্তে আস্তে মানুষকে নিরুসাহিত করে চূড়ান্ত ধাপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, গণপরিবহনে বিশেষ করে বিমানে তো কোনও প্রকার ধূমপানের সুযোগ এখন নেই। গণপরিবহনেও যেগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সেগুলোয় এখন আর ধূমপানের কোনও সুযোগ নেই। রেলওয়ে আর লোকাল বাস বা ননএসি বাসগুলোতে এখনও ধূমপান বা সিগারেট পান হয়। তারপরেও গণপরিবহনগুলোতে আস্তে আস্তে অন্যদের ডিস্টার্বের কারণে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তবে গণপরিবহনে ধূমপানে জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতা পুলিশকে দিলে ধুমপানমুক্ত গণপরিবহন হবে।

বক্তারা পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি বছর বিশ্বে ৬ কোটি মানুষ ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তামাক খাত থেকে বছরে ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। পক্ষান্তরে তামকজনিত রোগে বছরে চিকিৎসা খাতে ব্যয় হয় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে দেখা যায় এটা কখনও কোনো লাভজনক কিছু হতে পারে না।

Related posts: