গাদাগাদি করে ভ্রমণের ফলে করোনা পরিস্থিতি ঈদের পরে খারাপের দিকে চলে যেতে পারে

চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে টানা ৯ দিন ধরে পরীক্ষার বিপরীতে করোনার সংক্রমণ শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কারণ নেই। ঈদ সামনে রেখে যেভাবে মানুষ রাজধানী থেকে গ্রামের পথে ছুটে যাচ্ছেন এবং পথে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও আশঙ্কাজনক। ঈদের পরে যেকোনো সময় পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে যেতে পারে।

রোববার এক অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অন্যতম মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এই আশঙ্কার কথা জানান।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবার প্রচেষ্টায় যে জায়গায় এসেছি, এখানে যদি শিথিলতা দেখানো হয়; গাদাগাদি করে যদি মানুষ এভাবে ভ্রমণ করতে থাকে তাহলে ঈদের পরে পরিস্থিতি যেকোনো সময় ভালো থেকে খারাপের দিকে চলে যেতে পারে। এই আশঙ্কা আমাদের আছে। আর আছে বলেই বিধিনিষেধের ওপর বারবার জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।’

নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে সারা দেশে উদ্বেগ আছে। ভয় না পেয়ে সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করা গেলে বর্তমানের স্থিতিশীল অবস্থা ধরে রাখা সম্ভব হবে। ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের কঠোরভাবে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

গত মার্চ থেকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তবে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ নিম্নমুখী। গতকাল টানা নবম দিনের মতো রোগী শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে ছিল। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট ১৬ হাজার ৯১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৮৬ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত আরও ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৩ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে মারা গেছেন ১১ হাজার ৯৩৪ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ১০ হাজার ১৬২ জন। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় দেশে করোনায় সুস্থ হওয়ার হার ৯১ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

সুত্র: প্রথম আলো/এমএস