ঢালাও আমদানি নিরুৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: আমদানি ব্যয় ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় চাপে পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার। এরকম পরিস্থিতিতে জ্বালানি, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য পণ্য, ওষুধসহ কিছু পণ্য ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে নূন্যতম এলসি মার্জিন ২৫ শতাংশ করতে হবে। এতদিন যেকোনো আমদানি এলসির বিপরীতে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিন নির্ধারিত হতো।

সোমবার এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যেই দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০০৩ সালের ২ডিসেম্বরের নির্দেশনার আলোকে আমদানি ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিনের হার নির্ধারণের নির্দেশনা রয়েছে। বিরাজমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শিশুখাদ্য, জ্বালানিসহ অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্প এবং কৃষি খাত সংশ্নিষ্ট আমদানি ব্যতীত অন্যান্য সকল পণ্য আমদানির বিপরীতে ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিন হার নূন্যতম ২৫ শতাংশ করার নির্দেশনা দেওয়া হলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, রেমিট্যান্স কমলেও আমদানিতে বর্তমানে প্রায় ৫০ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এসময়ে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি আছে ৩৩ শতাংশের মতো। এরকম অবস্থায় বাজারে ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। বাজার ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতে অর্থবছর ৪১৬ কোটি ডলারের মতো বিক্রি করেছে। এতে করে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠে যাওয়া রিজার্ভ ৪৪ কোটি ডলারে নেমেছে। এসব কারণে কিছুটা সতর্ক অবস্থানের জন্য এমন বার্তা দেওয়া হলো।

সাধারণভাবে আমদানি এলসির বিপরীতে পণ্য দেশের আসার পর বিল পরিশোধ করতে হয়। তবে আমদানি ঋণপত্র খোলার সময় গ্রাহককে ব্যাংকে পণ্য মূল্যের একটি অংশ জমা দিতে হয়। যাকে এলসি মার্জিন বলে। এই মার্জিনের বিষয়টি নির্ধারিত হয় ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে।

ব্যাংকের সাথে গ্রাহকের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক ভালো হলে নূন্যতম ১০ শতাংশ মার্জিনেও এলসি খোলা হয়। তবে রমজানের আগে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধে গত ১০ মার্চের এক নির্দেশনায় ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, খেজুর, ফলমূল এবং চিনিসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানিতে শুন্য মার্জিনে এলসি খুলতে বলা হয়। এলসি কমিশনও সর্বনিন্ম পর্যায়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।