পুঁজিবাজারে তিন ধরনের বিনিয়োগ করবে ব্যাংকগুলো

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: আস্থাহীনতার পাশাপাশি চরমভাবে তারল্য সংকটে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এ সংকট দূর করতে কয়েক দিনের মধ্যে পুঁজিবাজারে তিন ধরনের বিনিয়োগ করবে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো। প্রথমে ব্যাংকগুলো এক্সপোজারের ২ শতাংশ করে বিনিয়োগ করবে। এছাড়াও যেসব ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করেনি, সেসব ব্যাংক দ্রুত ফান্ড গঠন করে বিনিয়োগ করবে।

বুধবার (৯ মার্চ) বর্তমান পুঁজিবাজারের পরিস্থিতিতে তারল্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে ব্যাংকগুলোর প্রধান হিসাব কর্মকর্তাদের (সিএফও) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো সিএফওরা।

এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ও বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে। যা পুঁজিবাজারে উন্নয়নে অনেক বেশি সহায়ক হবে। বাজার অনেক পরিপক্ব বাজার হিসেবে পরিগণিত হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজারের পরিস্থিতে তারল্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো সিএফওর সঙ্গে কমিশনের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে তিনটি বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন।

তিনটির মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে- নিয়ম অনুসারে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর সর্বোচ্চ এক্সপোজার (বিনিয়োগের সীমা) লিমিট ২৫ শতাংশ। যেসব ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটের ২৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। যেসব ব্যাংক আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ২ শতাংশ করে বিনিয়োগ করবে।

দ্বিতীয়ত হচ্ছে- এক্সপোজারে বাইরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ রয়েছে। ফলে যেসব ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করেছে কিন্তু বিনিয়োগ করেনি। কিংবা এখনো যেসব ব্যাংক এই তহবিল গঠন করেনি। তারা দ্রুত ফান্ড গঠন করবে। সবাই মিলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সার্পোটিং ওয়েতে সার্পোট দিতে বিনিয়োগ করবে।

এছাড়াও ব্যাংকের টায়ার-১ এবং টায়ার-২ এর এডিশনাল ক্যাপিটাল বৃদ্ধির জন্য যেসব ব্যাংক পারপেচুয়াল বন্ড ও সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর জন্য আবেদন করবে, সেগুলো সুপার ফাস্ট করে অনুমোদন দেওয়া হবে। ব্যাংকের ক্যাপিটাল রেইজিংয়ের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সমস্ত কার্যক্রমে কমিশন সার্বিকভাবে সহায়তা করবে।

মুখপাত্র বলেন, সিএফও ও কমিশনের সবাই তিনটি সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন। আমরা আশা করছি, এ তিন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারলে সাবঅডিটেন্টট এবং পারপাচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংকের মূলধন বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে মূলধনের ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের বিনিয়োগের আগামীতে আরও সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা বাড়বে। তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে। যা পুঁজিবাজারে উন্নয়নে অনেক বেশি সহায়ক হবে। বাজার অনেক পরিপক্ব বাজার হিসেবে পরিগণিত হবে।

উল্লেখ্য, তারল্য সংকটের ফলে দৈনিক লেনদেন ৩ হাজার কোটি টাকা থেকে ৬০০ কোটিতে নেমে এসেছে। গত এক মাস ধরে পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। দরপতনে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ দরপতন ঠেকাতে কমিশন আজ (বুধবার) থেকে নতুন করে শেয়ারে দাম কমার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার আরোপ করেছে। এ সিদ্ধান্তের কারণে আজ বড় উত্থান হয়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ১৫৫ পয়েন্ট।