শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তান হওয়ার শঙ্কায় নেই বাংলাদেশ : আইএমএফ

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে, এ অবস্থায় বাংলাদেশ পাকিস্তান কিংবা শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার শঙ্কা নেই বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ।

বুধবার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে রাহুল আনন্দ বলেন, বাংলাদেশ কখনো ঋণখেলাপি হয়নি। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে জোরালো পুনরুদ্ধার হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তা ব্যাহত হয়েছে। এতে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও দ্রুত কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়েছে। যদিও এসব প্রতিকূলতা বাংলাদেশ ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছে, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী অবকাঠামো সংকট রয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিও হুমকিতে রয়েছে। ২০৩১ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে মধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হতে অবকাঠামো সমস্যার সমাধান করতে হবে। বিশেষ করে প্রবৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে ও জলবায়ু স্থিতিশীলতা আনতে হবে বাংলাদেশকে।

এর আগে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম আইএমএফ সেভাবেই আমাদের ঋণ দিচ্ছে। আইএমএফের ঋণ আমরা পেতে যাচ্ছি ইনশাল্লাহ। ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার। সাত কিস্তিতে ২০২৬ পর্যন্ত এ ঋণ আসবে। প্রথম কিস্তি আসবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। বাকি ঋণ প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ৫১৯ মিলিয়ন এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) হিসেবে ৬টি সমান কিস্তিতে ২০২৬ সালের মধ্যে পাওয়া যাবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ মিশন জানিয়েছে তাদের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী তিন মাসের মধ্যে ঋণ প্রস্তাবের সব আনুষ্ঠানিকতা ও বোর্ড-এর চূড়ান্ত অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ হবে। ঋণটি ২০২৬ সাল পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি হবে। মোট ঋণের পরিমাণ হবে ৩ দশমিক ৪৬৮ বিলিয়ন এসডিআর। যা বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ আইএমএফ প্রথম কিস্তির ৩৫২ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন এসডিআর অর্থ ছাড় করতে পারবে বলে আশা করছি। বাকি ঋণ প্রতি ছয় মাস অন্তর ৫১৯ মিলিয়ন এসডিআর হিসেবে ছয়টি সমান কিস্তিতে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পাওয়া যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন। চলতি বছরের ২৪ জুলাই ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে আইএমএফকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল গত ২৬ অক্টোবর ঢাকায় আসে।