সূচকে মিশ্র প্রবণতা, কমেছে লেনদেন

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: নতুন বছরের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও কমেছে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক।

দুই বাজারে প্রধান সূচকের ভিন্ন চিত্র থাকার পাশাপাশি লেনদেনেও ছিল বৈপরীত্য। ডিএসইতে লেনদেন কমলেও সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এর সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে সিএসইতে দাম বাড়ার পরিমাণ বেশি।

ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বেশ দাপট দেখিয়েছে। এর মধ্যে নয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এরপরও লেনদেনের এক পর্যায়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের বিক্রেতা সংকট দেখা দেয়।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের সময় দু’মিনিট গড়াতেই ঋণাত্মক হয়ে পড়ে সূচক। তবে শেষ আধাঘণ্টার লেনদেনে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। এতে সূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৯২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আগের দুই কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ১২৫ পয়েন্ট। এর ফলে নতুন বছরের প্রথম তিন কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ল ১৩৫ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বেড়েছে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। এই সূচকটি আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৮২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৩১৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৩১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১০৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৬৮ কোটি ৯২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৯ কোটি ৩৮ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অ্যাকটিভ ফাইন, লাভেলো আইসক্রিম, জিনেক্স ইনফোসিস, পাওয়ার গ্রীড, সোনালী পেপার, ওরিয়ন ফার্মা এবং জিএসপি ফাইন্যান্স।

নয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের বিক্রেতা উধাও
এদিন ডিএসইতে ১৬৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮০টির। আর ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মধ্যে ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের ওপরে। যার মধ্য থেকে নয়টির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এমনকি এক পর্যায়ে এ নয় কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতাও উধাও হয়ে যায়।

এর মধ্যে রয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, লাভেলো আইসক্রিম, এস আলম কোল্ড রোল স্টিল, প্রগতী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং জাহিন টেক্স। এর মধ্যে লাভেলো আইসক্রিম টানা তিন কার্যদিবস দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করলো।

সিএসইর চিত্র
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৮টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।