হজে খরচ বাড়ছে, বেশি বিমান ভাড়ায় 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন সৌদি আরবে হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।  হজ প্যাকেজ ঘোষণার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সৌদি আরবের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত, করোনার প্রভাব, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধি, হজে ডেডিকেটেড হজের প্যাকেজ মূল্য বেশ বৃদ্ধি পাবে।  ২০০০ সাল দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল সরকার । সরকারি প্যাকেজটির খরচ ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং অপরটি ছিল বেসরকারিটি ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এর মধ্য বিমানভাড়া ছিল ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।

বুধবার (২৭ এপ্রিল)হজ ফ্লাইটের বিমান ভাড়া নির্ধারণে বৈঠক করবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সেখানে বিমান ভাড়া ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণের জন্য প্রস্তাব করবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। যদিও হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের জন্য প্রস্তাব করবে।

হজের প্রস্তুতি নিতে কাজ করছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা জন্য মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বৈঠক করেছে মন্ত্রণালয়। সভায় হজ প্যাকেজ প্রস্তুত করতে হজ ফ্লাইটের ভাড়া নির্ধারণ, ফ্লাইট শিডিউল প্রস্তুত করা, জেদ্দা ও মদিনা বিমানবন্দর দিয়ে সহায়তা করা, ফ্লাইটের টিকেট সংক্রান্ত তথ্য ই-হজ সিস্টেমে প্রকাশ, হজ এজেন্সির মাধ্যমে বিমান টিকেট প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। এবার শতভাগ হজ যাত্রীর সৌদি প্রান্তের ইমিগ্রেশন ঢাকায় হবে। এজন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি কর্তৃপক্ষের জন্য জায়গা বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।

এবার হজে সারাবিশ্বের ১০ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। হজযাত্রীর এই সংখ্যা কোটা অনুযায়ী বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন সৌদি আরবে হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা এবার হজে যেতে পারবেন না।

বিমান ভাড়া নির্ধারণের পরই চূড়ান্ত হবে হজ প্যাকেজ। এ কারণে হজ ফ্লাইটের ভাড়া নির্ধারণে বুধবার (২৭ এপ্রিল) বৈঠক ডেকেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সেখানে ভাড়া নির্ধারণ ছাড়াও ফ্লাইট শিডিউল প্রস্তুতসহ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, এবার হজ ফ্লাইটের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করতে প্রস্তাব করা হবে। যদিও তেলের মূল্য বৃদ্ধি, ডলার এক্সচেঞ্জে রেটের তারতম্যের কারণে বিমান ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করতে চেয়েছিল।

এদিকে মঙ্গলবার বৈঠকে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেন, হজের অনেকগুলো বিষয় সৌদি আরবের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। কোনও সমস্যা থাকলে আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সমাধান করবো। সময়ের সীমাবদ্ধতার মধ্যে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা সহকারে কাজ করে আমাদের উন্নত হজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

তবে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) বলছে, বিমান ভাড়া বাড়লে হজযাত্রীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এজন্য প্রতি বছরই হজের মৌসুমে আলোচনায় থাকে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া। শুধু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স হজ যাত্রী পরিবহন করায়, এয়ারলাইন্স দুটি ভাড়াও নির্ধারণ করে তাদের ইচ্ছে মতো। ভাড়া কমানোর দাবি তুললেও বাস্তবায়ন হয় না। এই দুই এয়ারলাইন্সের একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধ করে প্রতিযোগিতামূলক ভাড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করেতে অন্যান্য এয়ারলাইন্সকে হজ যাত্রী পরিবহনের সুযোগ দেওয়ার দাবি হজ এজেন্সিগুলোর।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, দুটি এয়ারলাইনের পরিবর্তে অন্য আরও এয়ারলাইন হজ যাত্রী পরিবহন করলে একচেটিয়া ভাড়ার পরিবর্তে প্রতিযোগিতামূলক ভাড়া নির্ধারণ হবে।