প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য বরাদ্দ পেল ২২১০ প্রতিষ্ঠান

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে দুই হাজার ২১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রত্যেক বিদ্যালয়কে দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ বরাদ্দ দেওয়া হলো।

এ বরাদ্দের আওতায় দেওয়ালের প্লাস্টার মেরামত, দরজা, জানালা, বেঞ্চ, চেয়ার, কলাপসিবল গেট মেরামতসহ অন্য অবকাঠামো সংস্কার করা যাবে। তবে এ জন্য বিদ্যালয়গুলোকে মানতে হবে বেশ কয়েকটি শর্ত।

শর্তগুলো হলো-

১. উল্লিখিত মাইনর মেরামত কার্যক্রম বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে।

২. কাজ শুরুর পূর্বে অবশ্যই উপজেলা প্রকৌশলী কর্তৃক মেরামত কাজের প্রাক্কলন প্রস্তুত করে উপজেলা শিক্ষা কমিটির অনুমোদন নিয়ে মেরামত কাজ শেষ করতে হবে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এসএমসিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন।

৩. বরাদ্দ অর্থে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে মেরামত কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে।

(ক) বিদ্যালয় ভবন ওয়াশ ব্লক এবং টয়লেটের ক্ষতিগ্রস্ত প্লাস্টার মেরামত, (খ) দরজা, জানালা, বেঞ্চ, চেয়ার, কলাপসিবল গেট ইত্যাদি মেরামত (গ) ছাদের সিলিং, আস্তর মেরামত, (ঘ) ভবনের ওয়াল, কলাম, বীম এবং ছাদের ফাটল মেরামত, (ঙ) বিদ্যালয় ভবনের দরজা, জানালা রঙ করা, (চ) টাইলস (যদি থাকে), সিঁড়ির রেলিং, বিদ্যালয়ের গেট এবং ড্রেনেজ সিস্টেম মেরামত, (ছ) ব্ল্যাক বোর্ড প্লাস্টারকরণ এবং রঙ (জ) টয়লেটের পাইপ, ড্রেন, বেসিন, কমোড, প্যান ইত্যাদি মেরামত বা প্রতিস্থাপন, (ঝ) টিউবওয়েলের প্লাটফর্ম মেরামত এবং টিউবওয়েলের যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন, (ঞ) বিদ্যালয় ভবনের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা (সুইচ, ওয়্যারিং, ফ্যান ইত্যাদি) মেরামত, (ট) বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাটকরণ, (ঠ) বিদ্যালয় ভবনের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো মেরামত, (ড) এছাড়া বিদ্যালয়ের চাহিদাভিত্তিক অন্যান্য মেরামত।

৪. মেরামতের জন্য যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে তা মেরামতের আগে ছবি-ভিডিও করতে হবে। মেরামতের পরও ছবি-ভিডিও করতে হবে। এরপর সেগুলো রেজিস্ট্রি করে সংরক্ষণ করতে হবে।

৫. বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ে কোন কোন খাতে মেরামত প্রয়োজন তার তালিকা প্রস্তুত করে প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট জমা দিতে হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাদ্দপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের মেরামতের তালিকা সংগ্রহপূর্বক একত্রে প্রাক্কলন প্রস্তাব তৈরির জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর (এলজিইডি) নিকট প্রেরণ করবেন। উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কর্তৃক প্রাক্কলন প্রস্তাব প্রস্তুতপূর্বক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করবেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রাক্কলন প্রস্তাব মহানগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটিতে অনুমোদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।

৬. বরাদ্দপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে মেরামতের প্রয়োজন না থাকলে অথবা রাজস্বখাত থেকে বর্তমান অর্থবছরে বিদ্যালয়ে মেরামত বাবদ বরাদ্দ পেয়ে থাকলে অথবা এলজিইডি কর্তৃক মেজর মেরামতের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া চলমান থাকলে বরাদ্দকৃত এ অর্থ ব্যয় করা যাবে না। এক্ষেত্রে বরাদ্দপ্রাপ্ত অর্থ সমর্পণ করতে হবে।

৭. নিরীক্ষার (অডিট) জন্য বিল, ভাউচার ও প্রাক্কলনের কপি উপজেলা শিক্ষা অফিসে সংরক্ষণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উক্ত বিল, ভাউচার ও প্রাক্কলনের এক কপি নিজ বিদ্যালয়ে সংরক্ষণ করবেন।

৮. বিদ্যালয় মেরামতের প্রাক্কলন উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে অনুমোদন ব্যতীত অর্থ ব্যয় করা যাবে না। অর্থ আবশ্যিক ভাবে ৩০ জুন ২০২৩ তারিখের মধ্যে ব্যয় করতে হবে।

৯. উপজেলায় বরাদ্দপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়েছে কি না এবং মাইনর মেরামত কাজের গতি বিষয়ে ছকে একটি প্রতিবেদন মেইলে ([email protected]) প্রেরণ করতে হবে।

১০. অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থ বিভাগের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। প্রকিউরমেন্ট সংক্রান্ত সব আইন ও বিধিবিধান এবং চ্যাট/আয়কর কর্তনসহ সরকারের প্রচলিত সব আর্থিক বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে।

১১. অ্যাকাউন্টস অফিস হতে বিল পাসের পর উপজেলা-থানা শিক্ষা কর্মকর্তা কোন ভাবেই নগদ অর্থের মাধ্যমে বিদ্যালয় পর্যায়ে অর্থ প্রদান করতে পারবেন না। অবশ্যই বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট হিসাবে অর্থ স্থানান্তর বা জল চেকের মাধ্যমে তা প্রদান করতে হবে।

১২. উক্ত মেরামত কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ স্বচ্ছতা অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের আর্থিক অনিয়মের জন্য ডিডিও দায়ী থাকবেন।

১৩. পত্রের কপি সব প্রধান শিক্ষককে আবশ্যিক ভাবে বিতরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের অবহেলা গ্রহণযোগ্য হবে না।