সিজিপিএর শর্ত শিথিলসহ ৩ দফা দাবি সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: চূড়ান্ত পরীক্ষায় সিজিপিএর শর্ত শিথিলসহ তিন দফা দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের দর্শন বিভাগের তিনটি সেশনের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৬ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এসময় তাদেরকে ‘দাবি মোদের একটাই, পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন চাই’, ‘আমাদের দাবি, মেনে নাও ঢাবি’, ‘উই ওয়ান্ট প্রমোশন’, ‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’ সহ দাবি আদায়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার শুরু থেকেই সাত কলেজের দর্শন বিভাগের ফল বিপর্যয় হয়ে আসছে। বারবার বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হলেও তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি। তাছাড়া পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএর নির্ধারিত শর্তের কারণে আরও সমস্যা বেড়েছে। তাই এসব শর্ত শিথিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম সহজ করার দাবিও জানান তারা।

এসময় তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো —

১. করোনা বিবেচনায় সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিবেচনায় পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন দিতে হবে।
২. দর্শন বিভাগের প্রশ্নের মানবন্টন পরিবর্তন করতে হবে। ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৮০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে হবে এবং ২০ নম্বর ইনকোর্সের মাধ্যমে যোগ করতে হবে।

৩. গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ নির্ধারণ ও প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

সরকারি কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ হোসেন কাইয়ূম বলেন, এখন পর্যন্ত বিভাগের শিক্ষকরাও বলতে পারেন না ফল বিপর্যয়ে কী কারণে হচ্ছে। তারা সব সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখিয়ে বলেন যা হচ্ছে সব ঢাবি থেকেই। আমরা কিছু বলতে পারি না।

তবে ফল বিপর্যয়ের বড় কারণ ইনকোর্স পরীক্ষার নম্বর যুক্ত না হওয়া বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী মুনতাসির ফাহিম বলেন, তিনটি সেশনেই ভয়াবহ ফল বিপর্যয় হয়েছে। বারবার আমাদের শিক্ষকদের অনুরোধ করেছি যেন ইনকোর্সের নম্বর প্রতিবছর যুক্ত হয়। কিন্তু তারা সেটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারেননি। যার কারণে ফল বিপর্যয় কমছে না।

অপরদিকে শিক্ষার্থীদের টানা ২ ঘণ্টার অবরোধে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে আজিমপুর পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে এলিফেন্ট রোড এবং ইডেন মহিলা কলেজের শেষ সীমানা থেকে পলাশী সড়কে ডাইভারশন দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা।

নিউমার্কেট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাহেব আলী বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ২ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। আমরা ডাইভারশন দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছি। তারপরও মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের বিষয়ে সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, প্রমোশনের ব্যাপারে সিজিপিএর যে সিদ্ধান্ত সেটি আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের ফল বিপর্যয় রোধে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানরা বৈঠক করেছেন। পড়াশোনার মান উন্নয়নে তারা কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবেন।

প্রসঙ্গত, এই একই দাবিতে গত রবিবার (১৩ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনেও মানববন্ধন করেছিল এসব শিক্ষার্থীরা।