নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি,

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রোলিং চেয়ার ঘুরিয়ে নবীন এক ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনার জেরে ফের আন্দোলন শুরু করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৩ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দোষীদের স্থায়ী বহিষ্কার করার দাবিতে আন্দোলন করছি। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায় প্রশাসনের যে বিচার দেখলাম তা খুবই দুঃখজনক এবং আমরা হতাশ হয়েছি। এসব ঘটনায় দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে পরবর্তীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।

আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু বিচার না করবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং আর কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব না।

আন্দোলন চলাকালে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক তপন কুমার সরকার, অগ্নিবীণা হলের প্রভোস্ট কল্যানাংশু নাহা, সহকারী প্রক্টর ইরফান আজিজ, আসাদুজ্জামান নিউটন ও চন্দন কুমার পাল।

এই সময় তপন কুমার সরকার বলেন, আমরা তোমাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করছি এবং এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। তবে আইনগতভাবে অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা যায় না। সকল প্রক্রিয়া মেনেই আমরা এসব ঘটনার সমাধানের পথে আগাচ্ছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে এবং তারা কাজ করছে। খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের ২০৪ নং কক্ষে নির্যাতনের শিকার হন সাগর চন্দ্র দে নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। আর অভিযুক্ত হলেন চারুকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক জাহান।

শনিবার রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাগর চন্দ্র দের সাথে কথা হলে ঢাকা পোস্টকে তিনি জানান, এদিন বিকেলে ওই কক্ষে তাকে রোলিং চেয়ারে জোর করে বসিয়ে ঘোরাতে থাকেন কক্ষটিতে থাকা সিনিয়র ছাত্র সৌমিক জাহান। এ সময় তাকে বারবার থামাতে বলছিলেন সাগর। কিন্তু তার কথায় কান না দিয়ে অনবরত চেয়ারটি জোরে ঘোরাতে থাকে। এক পর্যায়ে চেয়ারটি উল্টে গিয়ে পড়ে যান সাগর। এতে মাথায়, নাকে-মুখে মারাত্মক আঘাত পান তিনি। এ সময় দুটি দাত ভেঙে গিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয় তার। তবে এ অবস্থাতেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী। এমনকি সাগরের ফোন ছিনিয়ে নিয়ে আটকে রাখেন সৌমিক।