ফের চালু হলো ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ দুই বছর পর ফের চালু হয়েছে ঢাকা-কলকাতা আন্তর্জাতিক রেলপথে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস। রোববার মৈত্রী এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন থেকে ১৬৫ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্য ছেড়ে যায় মৈত্রী এক্সপ্রেস।

এর উদ্বোধন করেন রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার।

এদিন একইসঙ্গে খুলনা-কলকাতা রুটে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ চলাচল শুরু করেছে।

এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, যুগ্ম মহাপরিচালক সালাউদ্দিন, ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তা শফিকুর রহমান ও স্টেশন মাস্টার লিটন চন্দ্র উপস্থিত ছিলেন।

স্টেশন মাস্টার লিটন চন্দ্র বলেন, যথাসময়ে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে। যাত্রীরা আগের মতোই নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে যাত্রা করতে পারবেন।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী জানান, ২৭ মাস বন্ধ থাকার পর ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং একইদিন খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির চলাচল শুরু হলো।

যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, বাসযাত্রায় ভোগান্তি অনেক আর বিমানে তো বেশি খরচ হয়। তাই নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মাধ্যম বলতেই আমার প্রথম পছন্দ ট্রেন।

এ উপলক্ষে ২৩ মে (সোমবার) থেকে কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে আন্তর্জাতিক ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এছাড়া রেলপথের ভিসাও দেওয়া হচ্ছে। করোনার মহামারির কারণে বাংলাদেশ-ভারত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয় ২০২০ সালের ২৪ মার্চ থেকে। এ সময়ে দুই দেশের মধ্যে সড়ক ও আকাশপথে যাত্রী ভ্রমণ থাকলেও রেলপথে ছিল না। এতে চরম বিপাকে পড়েন উভয় দেশের সাধারণ মানুষ, যাদের অধিকাংশই ট্রেনে ভ্রমণ করতেন।

২০০৮ সাল থেকে ঢাকা-কলকাতার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বন্ধ হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহের সব দিনই এই ট্রেন চলাচল করত। অপরদিকে খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয় ২০১৭ সালে। বাংলাদেশ থেকে বৃহস্পতিবার ও রোববার দুই দিন এই ট্রেন ছেড়ে যাবে। ভারত থেকে আসবে দুই দিন।

রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর জানায়, মিতালী এক্সপ্রেসে ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত এসি বার্থের ভাড়া হবে চার হাজার ৯০৫ টাকা। এসি সিটের ভাড়া তিন হাজার ৮০৫ টাকা। আর এসি চেয়ারের ভাড়া দুই হাজার ৭০৫ টাকা।

খুলনা-কলকাতা রেলপথের দূরত্ব ১৭২ কিলোমিটার। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ ট্রেনে চেয়ার কোচ ভাড়া এক হাজার ও কেবিনের সিট ভাড়া এক হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া ভ্রমণ কর রয়েছে আরও ৫০০ টাকার। বেনাপোল স্থলবন্দরে যাত্রীর পাসপোর্ট, ভিসাসহ ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে।

ঢাকা-কলকাতার দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার। এ রুটের যাত্রীপ্রতি ট্রেন ভাড়া ট্রাভেল ট্যাক্সসহ (৫০০ টাকা) এসি সিট তিন হাজার ৫০৫ টাকা ও এসি চেয়ার দুই হাজার ৫০৫ টাকা। উভয় দেশে যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকলেও করোনাকালে বাংলাদেশ-ভারতে রেলপথে পণ্য পরিবহন করা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারত থেকে রেলপথে পণ্য আমদানি হয় ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগের (২০১৯-২০) অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৩৪ হাজার মেট্রিক টন।