বোয়ালমারীতে বিচারাধীন সম্পত্তি দখলের চেষ্টা, ১৪৪ ধারা

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিচারাধীন সম্পত্তি নিজের দখলে নিতে রাতের আঁধারে প্রতিপক্ষের দোকান দখল করে মালামাল লুটসহ ইট-সিমেন্টের স্থাপনা গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিচারাধীন মামলার রায়ের মাত্র এক সপ্তাহ আগে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের চিতারবাজারে এই ঘটনা ঘটে। ইউনিয়নটির বাজিতপুর গ্রামের আমিন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছেন একই গ্রামের মো. সালিমুল হক। আগামী ২১ নভেম্বর বিচারাধীন ওই সম্পত্তির মালিকানা নির্ণয়ে রায়ের দিন ধার্য করেছে আদালত। ঘটনার পর জায়গাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার চিতার বাজারের মোবারকদিয়া মৌজার ৩৮৬নং দাগের ২৯ শতক জমির মালিক সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক বিশ্বাস। ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ওই জমিতে দোকান তুলে ব্যবসা করে আসছিলেন শামসুল হক বিশ্বাসের নাতিন সালিমুল হক। বছর দেড়েক আগে একই জমির মালিকানা দাবি করে আমিন বিশ্বাস। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠক বসলেও শালিসের রায় মানেনি আমিন বিশ্বাস। শেষ পর্যন্তু বিষয়টি আদালতে গড়ায়। ভূমি বিক্রয় ও বণ্টন নীতিমালার ধারায় দুটি মামলাও বিরাজমান রয়েছে আদালতে। মামলাটির সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শুনানি শেষে আগামী ২১ নভেম্বর বিচারের রায় দেওয়ার কথা রয়েছে। মামলায় হেরে যেতে পারেন এমন আশঙ্কায় বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করে গত ১৪ নভেম্বর রাতের আঁধারে সালিমুল হকের দোকানের তালা ভেঙে দোকানঘরটি দখল করে নেন আমিন বিশ্বাস। এসময় দোকানে থাকা আসবাবপত্র ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং টিনশেট ঘরের স্থানে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করে সে। বিষয়টি নিয়ে সালিমুল হক আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত জায়গাটির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। বোয়ালমারী থানা পুলিশ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সব ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

সালিমুল হক জানান, জায়গাটির মালিক আমার দাদা সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক বিশ্বাস। ওয়ারিশ সূত্রে এ জমির উপর দীর্ঘদিন যাবত আমি দোকান করে ব্যবসা করে আসছি। বাজিদপুর গ্রামের আকবর বিশ্বাসের ছেলে আমিন বিশ্বাস আমার শরিকদের থেকে একই দাগ থেকে ৬.১০ শতক জমি ক্রয় করেন। যা এই দাগের উত্তর পাশ দিয়ে তিনি ভোগ দখলে রয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে তিনি আমার মালিকানাধীন দোকনের জায়গার মালিকানা দাবি করে বসেন। যে কারণে আদালতে দুটি মামলাও চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে রায়ের দিন ধার্য করেছে আদালত। ঠিক সে সময় গায়ের জোরে রাতের আঁধারে আমার দোকান দখল করে নিয়েছেন আমিন বিশ্বাস।

চিতার বাজার বণিক সমিতির সদস্য মো. শাহজাহান শেখ জানান, জায়গাটি নিয়ে বিরোধ রয়েছে, আমরা দুই পক্ষকে নিয়ে একটি নিষ্পত্তির চেষ্টা করি। কিন্তু আমিন বিশ্বাস আমাদের দেওয়া রায় মানেনি। জমির বিরোধ নিয়ে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় আমিন বিশ্বাস রাতের আঁধারে জায়গাটি দখল করে নিয়েছে।

অভিযুক্ত আমিন বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি, তবে তার ছোট ভাই সুলতান বিশ্বাস এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।

চিতার বাজার বণিক সমিতির সভাপতি এমএ মাজেদ বলেন, আমিন বিশ্বাস মালিকানা দাবি করলেও জায়গা ও দোকান সালিমুলের দখলে ছিল। আমিন বিশ্বাস সালিমুলের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বিষয়টি নেয়ে মামলা হয় বাজার কমিটি মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্তু অপর একটি তালা লাগিয়ে রাখে। সেই তালা ভেঙে আমিন বিশ্বাস দোকান দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান না হলে বড় ধরনের অঘটন ঘটারিআশঙ্কা রয়েছে।