মৌলভীবাজারে ডিমের উৎপাদন কমেছে

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মৌলভীবাজারের খামারিরা। এর ফলে কমেছে ডিম উৎপাদন। এতে খুচরা দাম ওঠানামা করায় হতাশ ক্রেতারা।

স্থানীয় খামারিদের দাবি, পোল্ট্রি সামগ্রীর দাম বাড়ায় তারা লোকসানে আছেন। ঢাকার বড় কোম্পানিগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ডিমের দাম বাড়াচ্ছে। তবে খামারি পর্যায়ে দাম তেমনটা না বাড়ায় ডিমের উৎপাদন কমেছে।

প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, ঢাকা থেকে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তাই বাজারে ডিমের দাম ওঠানামা করছে। হাঁস-মুরগির খাদ্য ও ওষুধের মুল্যবৃদ্ধির কারণে শঙ্কায় পড়েছেন প্রান্তিক খামারিরা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা ৫০ পয়সা ও হাঁসের ডিম ১৫ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

খুচরা ডিম বিক্রেতা সজল বলেন, ‘ডিমের বাজার বেসামাল হয়ে গেছে। দাম ওঠানামা করছে। এতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।’

টেংরা বাজারে ডিম কিনতে আসা জাকির হোসেন বলেন, ‘ডিম পুষ্টিকর খাবার। পুষ্টির চাহিদা পূরণে ডিম কিনতে হচ্ছে। তবে বাজারে আজ এক দাম কাল আরেক দাম। দর ওঠানামায় হতাশ আমরা।’

টেংরাবাজারের ডিম বিক্রেতা ইউসুফ পাঠান বলেন, ‘আমরা স্থানীয় খামারির কাছ থেকে ডিম কিনি। খাদ্য ও ওষুধের দাম বাড়ায় ডিমের দামও বাড়ছে। এছাড়া পরিবহন খরচও বেড়েছে। বড় কোম্পানিগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ক্ষুদ্র প্রান্তিক খামারিরা লোকসানে পড়ছে। আমাদেরও ব্যবসা বাণিজ্য আগের মতো হচ্ছে না।’

একই বাজারের ডিমের আড়তদার রুহুল আমীন বলেন, ‘বড় কোম্পানিগুলো ডিম স্টক করে দাম বাড়ায়। আমরা স্থানীয় খামারি থেকে ডিম কিনি। ডিম বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না। স্থানীয় খামারিরা লোকসানে পড়লে ডিমের দাম আরও বাড়বে।’

মৌলভীবাজার জনতা পোল্ট্রি ফার্মের স্বত্বাধিকারী হাসান আহমদ বলেন, ‘আমার ৬০ হাজার ডিমের মুরগি ছিল। প্রতিদিন ৪০ হাজার ডিম পাওয়া যেতো। এখন ২০ হাজার মুরগি আছে। ১৭-১৮ হাজার ডিম উৎপাদন হয়। খাদ্যের বস্তা ছিল ১৭০০ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে ২৯০০ টাকা হয়েছে। এ অবস্থা বেশিদিন চললে পোল্ট্রি খামার চালানো যাবে না।’

প্রান্তিক খামারি বিমল পাল বলেন, ‘আগে ডিমের স্থানীয় বাজার মূল্য আড়তদাররা নির্ধারণ করতো। আর এখন ঢাকার কাজী ফার্ম, প্যারাগন, সিপি বাংলাদেশ, ডায়মন্ড এসব কোম্পানি নির্ধারণ করে বলে বাজারে ডিমের মূল্য দিন দিন বাড়ছে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুস সামাদ বলেন, ‘পোল্ট্রি খামার লাভজনক অবস্থানে ছিল। খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে ডিম উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারি ঝরে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। লোকসানে আছে খামারি আর লাভে আছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। স্থানীয় খামার রক্ষা করতে হলে বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে। বড় বড় কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় ডিমের দাম বাড়ছে এবং বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে।’