জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার চায় ১৪ দল

জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম দ্রুত প্রত্যাহার করে পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতারা। যে হারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে, সেটা জনস্বার্থবিরোধী বলে মনে করছেন তারা।

সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো এবং এই সুযোগে সব ধরনের পরিবহন ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সার্বিকভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে এবং জনগণের জীবন যাত্রার ওপর এর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন ১৪ দলের নেতারা।

১৪ দলের নেতারা জানান, এক লাফে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ক্ষেত্রে জনগণের স্বার্থের পরিবর্তে বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন)-এর লাভকেই সরকার গুরুত্ব দিয়েছে। সরকার সার্বিক অর্থনীতির স্বার্থ, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি কোনোটাই বিবেচনায় নেয়নি।

ওই জোটের নেতারা আরও জানান, সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আলোনা করে ভাড়াও বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম এবং পরিবহন ভাড়া বাড়ানোয় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনগণ। এতে জনগণের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে। অথচ দাম বাড়ানোর ব্যাপারে জনগণ বা জনগণের প্রতিনিধিদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এতে সরকারের জনবিচ্ছিন্নতা প্রকাশ পায় বলেও তারা মন্তব্য করেন।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৪ দল নেতারা এই মুহূর্তে বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করে তা পুনঃনির্বারণ এবং সরকারকে এই খাতে ভর্তুকি দেওয়ার দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওযার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিপিসির লোকসানের কথা বলে ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো। কিন্তু আগে যখন বিপিসি লাভ করেছে, তখন সেই লাভের ভাগ তো জনগণকে দেওয়া হয়নি। এখন লোকসানের টাকা জনগণকে দিতে হবে। এই দাম বাড়ানোয় জনগণের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে। তাই দ্রুত জ্বালানি তেলের মুল্য পুনঃনির্ধারণ করতে হবে।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, জ্বালানি তেলে দাম বাড়ানার ফলে পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে। সরকারকে জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় নিতে হবে। জ্বালানির দাম বাড়ানোর আগে জনগণের মতামত নেওয়ার উচিত ছিল। এখন সবপক্ষকে নিয়ে বসে জ্বালানি তেলের দাম পুনঃনির্ধারন করতে হবে, যাতে জনগণের স্বার্ধ রক্ষা হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, জনগণের দুঃখ-কষ্ট সরকারের বিবেচনায় নেই। সরকার এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিলো, অথচ এ বিষয়ে জনগণের মতামতের বিষয় বলে একটা কথা আছে, সেগুলো বিবেচনায় নেয়নি। এর ফলে জনগণ সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন সরকারের পক্ষেই এটা সম্ভব। এই বর্ধিত মুল্য প্রত্যাহার করতে হবে।

ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পদক ইসমাইল হোসেন বলেন, সরকারের দায়িত্ব জনগণের স্বার্থ দেখা। সেটা না করে সরকার ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে জনগণ দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এই বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করতে হবে এবং ভর্তুকি দিতে হলে সরকারকে।