ওমিক্রনের পর কোভিডের ‘মারাত্মক’ নতুন ধরন নিওকোভের সন্ধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চীনের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাসের একটি রূপান্তরিত ধরনের সন্ধান পেয়েছেন। নতুন এই ভাইরাসটির বৈজ্ঞানিক নাম পিডিএফ-২১৮০-কোভ, তবে সাধারণভাবে এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নিও কোভ’।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মূল করোনাভাইরাস ও সেটির যতগুলো রূপান্তরিত ধরন এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে, সেসবের মধ্যে নিউকোভ সবচেয়ে সংক্রামক ও প্রাণঘাতী। তবে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু বাদুড়ের মধ্যে। কোনো মানুষ এটির দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন- এমন তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বিশ্বে প্রথম যে স্থানে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল,চীনের সেই উহান শহরের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এ বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী বায়োরিক্সিভে সম্প্রতি ছাপাও হয়েছে সেই প্রতিবেদন। তবে সেটির পিআর রিভিউ এখনও হয়নি।

গবেষণা প্রবন্ধে উহানের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, কয়েক বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যে শনাক্ত হওয়া ভাইরাস মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (মের্স কোভ) ও করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন বিটার সঙ্গে প্রচুর সাদৃশ্য রয়েছে নতুন এই ভাইরাস নিউকোভের।

মধ্যপ্রাচ্যে মের্স কোভ ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব হয়েছিল ২০১২ সালে। গৃহপালিত উট থেকে মানবদেহে সংক্রমিত হওয়া এই ভাইরাসটি মূলত সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাসের সমধর্মী একটি ভাইরাস। এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলেও কোভিডের মতো জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

মের্স কোভ ভাইরাসের সংক্রমণে ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

উহানের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে- মের্স কোভ ও বিটার সংমিশ্রণে উদ্ভব ঘটেছে নিওকোভ ভাইরাসটির। এখন পর্যন্ত এটি কেবল বাদুড়ের দেহেই শনাক্ত হয়েছে, তবে কোভিডের মতো যদি বাদুড় থেকে মানবদেহে এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে- সেক্ষেত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় শুরু হবে বিশ্বজুড়ে।

এই বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে গবেষণা প্রতিবেদনে তারা বলেন, প্রথমত এই নিওকোভ মূল করোনাভাইরাস ও এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ভাইরাসটির রূপান্তরিত ধরনসমূহের মধ্যে সবচেয়ে সংক্রামক বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তাছাড়া এই ভাইরাসটি অনেক বেশি প্রাণঘাতীও। মানবদেহে যদি এটির সংক্রমণ শুরু হয় সেক্ষেত্রে প্রতি ১০০ জন আক্রান্ত রোগীর ৩৫ জনেরই মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।