মাত্র ৪ মিনিটে করোনা পরীক্ষায় সক্ষম যন্ত্র আবিষ্কার

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: চীনের বিজ্ঞানীরা এমন একটি সেন্সর আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে মাত্র ৪ মিনিটে করোনা টেস্টের রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব; এবং সেই রিপোর্টের মান পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) টেস্টের মতোই নির্ভরযোগ্য।

সোমবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন এই সেন্সর। আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী নেচার বায়োমেডিকেল ইঞ্চিনিয়ারিংয়ে সম্প্রতি প্রকাশিতও হয়েছে এ বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনটি।

প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেছেন, ‘যে সেন্সরটি আমরা তৈরি করেছি, সেটি এক প্রকার ইলেকট্রোমেকানিক্যাল বায়োসেন্সর, যা আসলে একটি সমন্বিত যন্ত্র। মানুষের নমুনা পরীক্ষা করে মাত্র চার মিনিটে এই বায়োসেন্সর সঠিক রিপোর্ট দিতে সক্ষম এবং এর আর একটি সুবিধাজনক দিক হলো- এটি খুব সহজেই পরিবহনযোগ্য।’

যন্ত্রটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ৮৭ জন স্বেচ্ছাসেবকের নমুনা পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। সেই পরীক্ষায় ৩৩ জন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, ৫৪ জন শনাক্ত হয়েছেন নেগেটিভ হিসেবে।

পরে এই ৮৭ জনের পিসিআর টেস্ট করানো হয়, এবং সেখানেই একই ফলাফল আসে।

করোনার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য টেস্টিং পদ্ধতি হিসেবে পিসিআর টেস্ট আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তবে এই টেস্টের রিপোর্ট পেতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। পাশপাশি, যে যন্ত্রে এই টেস্ট করা হয় সেটি যথেষ্ট ভারী ও দামী বিধায় অনেক দরিদ্র দেশের পক্ষেই জাতীয় প্রয়োজনের অনুপাতে সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অধিকসংখ্যক যন্ত্র কেনা সম্ভব হয়না।

এক্ষেত্রে র‌্যাপিড করোনা টেস্ট বলে হয়তো আরটিপিসিআর টেস্টের বিকল্প হতে পারত, কিন্তু বাজারে বর্তমানে যেসব র‌্যাপিড টেস্টিং কিট আছে, সেগুলো কোনোইটিই শতভাগ নির্ভূল টেস্ট রিপোর্ট দিতে সক্ষম নয়।

আবার বর্তমানে বিভিন্ন দেশ একের পর এক সীমান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করায় করোনা টেস্টিংয়ের হার ও প্রয়োজনীতা যেভাবে বাড়ছে, তাতে প্রতিদিনই চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন দেশের আরটি-পিসিআর ল্যাবগুলোতে। যেহেতু এই টেস্টের রিপোর্ট পেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে, তাই ল্যাবগুলো চাইলেও দ্রুত সময়ে পরীক্ষা করাতে আসা লোকজনকে রিপোর্ট দিতে পারছে না।

এমন পরিস্থিতিতে আরটি-পিসিআর টেস্টের কার্যকর বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এই চীনা বায়োসেন্সর। চীনের বিজ্ঞানীরা এএফপিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘এই সেন্সরটি দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও নির্ভুল রিপোর্ট প্রদান করে। পাশাপাশি, এটি খুব সহজে এক জায়গা থেকে অন্যজায়গায় নেওয়া যায়।’

‘যদি ব্যাপকভাবে এটি উৎপাদন ও ব্যবহার শুরু হয়, সেক্ষেত্রে যে কোনো পরিস্থিতিতে— এমনকি বাড়িতে বসেও করোনার টেস্ট করা ও নির্ভুল রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব।’