মূল ওমিক্রনের চেয়েও দ্রুত ছড়ায় নতুন উপধরন : গবেষণা

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: করোনার সবচেয়ে সংক্রামক ধরন ওমিক্রনের দাপটে কাঁপছে বিশ্ব। ঝড়ের গতিতে প্রতিদিন বিভিন্ন দেশে বাড়য়ে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা।

কিন্তু ডেনমার্কে সম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই ভাইরাসটির উপধরন বিএ.২ মূল ওমিক্রন বা বি.১.১৫২৯ থেকেও অনেক বেশি সংক্রামক; এবং টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করা লোকজনকেও অনেক সহজে আক্রান্ত করতে সক্ষম। মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদেন জানানো হয়েছে এ তথ্য।

ডেনমার্কের এক দল গবেষক গত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানী কোপেন হেগেনের ৮ হাজার ৫০০’রও বেশি পরিবারের করোনা রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, বিএ.২ উপধরনটি মূল ওমিক্রনের চেয়ে অন্তত ৩৩ শতাংশ বেশি সংক্রামক।

দেশটির রোগ ও জীবাণু গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টেটেনস সেরাম ইনস্টিটিউট (এসএসআই), কোপেন হেগেন বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি পরিসংখ্যান দফতার, ও ডেনমার্কের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এই গবেষক দল। তাদের গবেষণা প্রতিবেদনটির পিআর রিভিয়্যু অবশ্য এখনও হয়নি।

গবেষণা প্রবন্ধে ডেনিশ বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘ডেনমার্কে ওমিক্রনের যে উপধরনটি এখন সবচেয়ে সক্রিয় তার নাম বিএ.১। দেশের বর্তমান ৯৮ শতাংশ সংক্রমণের জন্য দায়ী এই ধরণটি। তবে আমাদের আশঙ্কা, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই বিএ.১ কে সরিয়ে তার জায়গায় আসন গেড়ে নেবে এটির জাতভাই বিএ.২।’

‘বিএ.১-এর চেয়ে বিএ.২ সহজাতভাবেই ব্যাপকমাত্রায় সংক্রামক এবং এটি অনেক দ্রুত ও সাবলীলভাবে মানবদেহে টিকার দুই ডোজের ফলে সৃষ্ট প্রতিরোধী শক্তিকে ফাঁকি দিতে পারে।’

গবেষক দলের প্রধান ফ্রেডেরিক প্লেসনার রয়টার্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘যদি আপনার বাড়ির কোনো সদস্য বিএ.২ তে আক্রান্ত হয়, সেক্ষেত্রে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে এই ধরনটিতে আপনার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৩৯ শতাংশ। বিএ.১ উপধরনের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা থাকে ২৯ শতাংশ।’

ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন ও নরওয়েতে বিএ.২ উপধরনটি শনাক্ত হয়েছে; কিন্তু ডেনমার্কে এই ধরনটি যত দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে, ওইসব দেশে এখনও সেই ব্যাপ্তি পায়নি এটি।

গবেষণা প্রতিবেদনে যদিও বলা হয়েছে বিএ.২ টিকার দুই ডোজ, এমনকি বুস্টার ডোজের ফলে মানবদেহে সৃষ্ট করোনা প্রতিরোধী শক্তিকে ফঁকি দিতে সক্ষম, কিন্তু তবুও ডেনমার্কের বিজ্ঞানীদের বক্তব্য- বিএ.২ থেকে সুরক্ষা পেতে হলে এখন পর্যন্ত টিকার কোনো বিকল্প নেই।

এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়, ‘টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, এমনকি বুস্টার ডোজ নেওয়া লোকজনকেও বিএ.২ আক্রান্ত করতে পারে- এটি সত্য; কিন্তু যারা টিকার একটি ডোজও নেন নি, তাদের তুলনায় টিকা নেওয়া লোকজন অনেক সুরক্ষিত।’