২০ লাখ টাকা অনুদান বিতরণে খরচ ১০ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভিন্ন সংস্থার কেনাকাটায় বালিশ চুরির গল্প আমাদের অনেকের জানা থাকলেও ডিজিটাল যুগে ২০ লাখ টাকা অনুদান বিতরণে ১০ লাখ টাকা খরচ করে নতুন রেকর্ড নিয়ে এলো ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।

সম্প্রতি ই-ক্যাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় নিরীক্ষিত প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় সদস্যদের প্রশ্নের মুখে পড়েন বর্তমান কমিটির সদস্য আবদুল ওয়াহেদ তমাল ও আবদুল হক অনু।

জানা গেছে, করোনাকালীন সময়ে ‘মানবসেবা’ নামে একটি জনহিতকর উদ্যোগ গ্রহণ করে ই-ক্যাব যেখানে দেশি, প্রবাসীসহ বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অনুদান প্রদান করে। সাধারণ সভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদন অনুযায়ী- এই প্রকল্পে সংগ্রহ ছিল ৩০ লাখ ছয় হাজার ২৩১ টাকা। যার মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ লাখ ছয় হাজার ৩৭ টাকা। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছেছে ২০ লাখ ১৯৪ টাকা।

ডিজিটাল যুগে ২০ লাখ টাকা বিতরণে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ই-ক্যাবের বর্তমান কমিটি। যার মূল কুশলী সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল ও অর্থ সম্পাদক আবদুল হক অনু।

জানা গেছে, দেশের প্রযুক্তিখাতের বেসিসের আধিপত্য রোধে ২০১৫ সালে ই-ক্যাবের যাত্রা শুরু হয়। রাজীব আহমেদ নামে একজন উদ্যোক্তা ফেসবুকে ই-কমার্স নিয়ে গ্রুপে ই-ক্যাবের ধারণা নিয়ে আসেন। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে রাজীব আহমেদকে রাখা হলেও মূল চাবিকাঠি থাকে কম্পিউটার জগৎ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য তমাল ও অনুর হাতে। সম্পর্কে চাচাতো দুই ভাই প্রতিষ্ঠার সাত বছর ধরে ই-ক্যাবকে একটি ‘পারিবারিক সংগঠন’ হিসেবে পরিচালনা করে সুবিধা গ্রহণ করেছেন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে।

দেশে ই-কমার্স ব্যবসায় প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সদস্য যোগ। বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে সুবিধা আদায়ে সামনে আনা হয় অভিনেত্রী শমী কায়সারকে যিনি ধাঁনসিড়ি নামে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার নির্বাহী প্রধান।

ই-ক্যাবের নেতৃত্ব পর্যায়ে আসেন বিজ্ঞাপন নির্মাতা শমী কায়সার, ইভেন্ট ব্যবসায় থাকা ব্রেকবাইটের আসিফ আহনাফের মতো বহিরাগতরা। বেশ কিছু বছর ধরেই আলোচনায় ছিলেন শমী কায়সার। ই-কমার্স ব্যবসায় না থাকলেও ই-ক্যাবের নেতৃত্বে থেকে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের প্রবেশাধিকার, সর্বোচ্চ বণিক সংগঠন এফবিসিসিআই’র পরিচালক পদ, ঘুরে বেরিয়েছেন দেশ-বিদেশ।

পাশাপাশি, সাংবাদিক ও ইভেন্ট ফার্ম অর্পন কমিউনিকেশনের মালিক আবদুল হক অনুও চাচতো ভাই তমালকে নিয়ে এগিয়ে নিয়েছেন নিজের ব্যবসা।

করোনাকালে ই-ক্যাবের উদ্যোগে ই-পোস্ট নামে একটি সেবা চালু হয়, যা পরবর্তীতে নিজস্ব ব্যবসা হিসেবে দখলে নেন আবদুল ওয়াহেদ তমাল। দখলে নিয়েছেন ই-ক্যাবের আরেকটি উদ্যোগ ই-জিনিয়াস নামে একটি মোবাইল অ্যাপ।

ই-কমার্স পলিসি কনফারেন্স নামে অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে আয়োজিত আলোচনা সভার নামে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা অনিয়মের চিত্র সামনে এসেছে সংবাদপত্রের মাধ্যমে ।

-এসআর/এমএ