আইসিইউ থাকা সত্বেও ব্যবহার হচ্ছে না

করোনার এই প্রতিকূল অবস্থাতে যেখানে আইসিইউ পাওয়া দুষ্কর হয়ে গেছে সেখানে খালি পড়ে আছে পাঁচটি নতুন আইসিইউ এবং ১৫টি এইচডিইউ। হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) ব্যবহৃত হয় রোগীকে আইসিইউ থেকে সাধারণ শয্যা বা কেবিনে পাঠানোর আগে চিকিৎসা দেওয়া জন্য।

২০২০ এর অক্টোবর মাসে পাঁচটি আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছিল ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে এবং চলতি বছরের এপ্রিলে ১৫টি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) বসেছে হাসপাতালটিতে। তবে এখন পর্যন্ত কোনোটিই চালু করা হয়নি।

কারণ হিসেবে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে এই সুবিধা দিতে পারছে না তারা।

তারা আরও জানান, গত মার্চ মাস থেকে চলতি জুলাই পর্যন্ত আইসিইউ ও এইচডিইউ চালুর জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে মোট পাঁচবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

১৫০টি শয্যা বিশিষ্ট মহানগর জেনারেল হাসপাতালটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। করোনা সংক্রমনের শুরু থেকে নিয়মিত চিকিৎসা বন্ধ রেখে শুধুমাত্র করোনার চিকিৎসা দিয়ে আসছে হাসপাতালটি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে হাসপাতালটিতে করোনা শয্যা আছে ১১০টি। শুধুমাত্র গত বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এখানে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার করোনা রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সেখানে।

ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রকাশ চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, করোনো রোগীদের চিকিৎসা দিতে তাঁরা হাসপাতালটি চালু করতে চান। একাধিকবার জনবলের চাহিদা দেওয়ার পরও অধিদপ্তর থেকে সাড়া পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, করোনার রোগীদের সেবা ও চিকিৎসা দিতে ২৫ জন চিকিৎসক, ৬ জন পরামর্শক, ৩০ জন নার্স, ৮ জন অবেদনবিদ (এনেসথেসিস্ট), ৬ জন মেডিকেল স্পেশালিস্ট, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ২৪ জন, ওয়ার্ডবয় ১৬ জন, ২ জন কম্পিউটার অপারেটর এবং ৬ জন টেকনোলজিস্ট (ল্যাবে ৪ জন, রেডিওলজিতে ২ জন) চেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় তাঁদের কিছু জানায়নি।

আইসিইউ স্থাপন করেও চালু না করার কারণ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্পষ্ট গাফিলতি রয়েছে বলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। করোনা চিকিৎসার জন্য নতুন স্থান খুঁজছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিব। আর এদিকে রাজধানী ঢাকাতেই একটি হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও অব্যবহৃত অবস্থায় কেন পড়ে আছে তা তাদের বোধগম্য নয়।