ভারতে চালের রপ্তানি মূল্য পড়তির দিকে

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

ভারতে চালের রপ্তানি মূল্য পড়তির দিকে। দেশটিতে গত কয়েক মাস ধরে মুদ্রা মান নিয়ে চলা অস্থিরতার ছাপ চালের বাজারেও পড়েছে। পাশাপাশি বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন মৌসুমের চাল। ফলে দেশটির পাইকারী বাজারে চালের দাম এখন কমতির দিকে। বাংলাদেশ ভারত থেকে বিপুল চাল আমদানি করে থাকে। সাধারণ হিসেব বলে, সে দেশে চালের রপ্তানি মূল্য কমতে থাকায় বাংলাদেশের আমদানীকারকরা লাভবান হবেন। বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকলে ভোক্তারাও এর সুফল পাবেন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অক্টোবরে দেশটিতে রপ্তানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের গড় দাম টনপ্রতি ৩৫০ ডলারে নেমে এসেছে। আগামী দিনগুলোয় দেশটির বাজারে নতুন মৌসুমের চালের সরবরাহ পুরোদমে বৃদ্ধির বিপরীতে রপ্তানি না বাড়লে খাদ্যপণ্যটির রপ্তানি মূল্য আরো কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছরের আগস্ট থেকে ভারতের বাজারে চালের রপ্তানি মূল্যে ধারাবাহিক মন্দাভাব বজায় রয়েছে। এ সময় প্রতি টন রপ্তানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের গড় রপ্তানি মূল্য ৩৬০ ডলারের উপরে ছিল। মন্দাভাবের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ অক্টোবরে ভারতের বাজারে ৫ শতাংশ ভাঙা চালের রপ্তানি মূল্য টনপ্রতি ৩৫০ ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ কম।

ভারতে চালের রপ্তানি মূল্য কমার পেছনে দুটি কারণ উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রথমত, নতুন মৌসুমের চালের সরবরাহ শুরু হয়েছে। আগামী মাস নাগাদ নতুন চালে বাজার ভরে উঠবে। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে পর্যাপ্ত চাল থাকলেও বেচাকেনা (বিশেষত রপ্তানি) অনেকাংশে কমে গেছে। দ্বিতীয়ত, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের জেরে মুদ্রাবাজারে ডলার বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা বেশ নড়বড়ে অবস্থানে চলে গেছে। এমনকি অক্টোবরের শুরুতে রুপির রেকর্ড দরপতন দেশটিতে চালের রপ্তানি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। এসব কারণে ভারতে চালের রপ্তানি মূল্য ধারাবাহিকভাবে কমতে শুরু করেছে। চলতি বছর ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রপ্তানিতে মন্দাভাব বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটা হলে দেশটির বাজারে চালের রপ্তানি মূল্য বর্তমানের তুলনায় আরো কমে আসতে পারে।

ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক দেশ। খাদ্যপণ্যটির মোট বৈশ্বিক রপ্তানি বাণিজ্যের ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ দেশটি এককভাবে জোগান দেয়। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছর ভারতের চাল রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। তবে ২০১৮ সাল শেষে ভারত থেকে চাল রপ্তানি দুই লাখ টন কমে দাঁড়াতে পারে ১ কোটি ২৫ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ কম। এর ফলে ভারতে চালের রপ্তানি মূল্যে নিম্নগতি আরো দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খবর ইন্ডিয়া ইনফোলাইন ও বণিক বার্তা।