‘জ্বালানি উন্নয়নে বিনিয়োগ চুক্তি’ শীর্ষক ক্যাবের নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ‘জ্বালানি উন্নয়নে বিনিয়োগ চুক্তি’ শীর্ষক কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।

নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান।

সূচনা বক্তব্য রাখেন ক্যাবের কো-অর্ডিনেটর (রিসার্চ) প্রকৌশলী শুভ কিবরিয়া।

মূখ্য আলোচক ছিলেন ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ।

ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন সভাপতিত্বে সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন জ্বালানি উপদেষ্টা ও ক্যাবের জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমরানুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সহযোগী অধ্যাপক প্রকৌশলী ড. সম্পদ ঘোষ।

জ্বালানি সনদ চুক্তি নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা করেন সারাদেশ থেকে আগত ক্যাবের জেলা প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ আরও অনেকে।

ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির ক্ষেত্রে সব সময় মার খায়। কখনও অজ্ঞতার কারণে কখনও স্বার্থের অন্বেষায় প্রভাবিত হয়। প্রতিযোগিতা ও স্বচ্ছতা না থাকায় একই জিনিস কারো কাছে ৩ পয়সা, কারো কাছ থেকে ৩০ পয়সা দিয়ে কেনা হচ্ছে। দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি দুর্বলের জন্য সহায়ক হয় না, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে শক্তিশালীরা প্রভাব বিস্তার করে থাকে। বহুপাক্ষিক চুক্তি অনেক সময় দুর্বলের জন্য সহায়ক হয়ে থাকে।

ক্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম বলেন, বিইআরসি ক্যাবের অভিযোগ আমলে নেয়নি। আমরা হাইকোর্টে গেছি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশ বাতিল করে দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, বিইআরসি নীরবতা পালন করেছে যা উচিত হয়নি। বিইআরসি বক্তব্য হচ্ছে নির্ধারিত ফর্মুলায় ভোক্তাকে অভিযোগ করতে হবে। নানা কারণে ভোক্তার পক্ষে সব সময় অভিযোগ করা সম্ভব হয় না।

তিনি বলেন, ইসিটি মূলত ফসিল ফুয়েল বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে জন্য করা হয়েছে। ইসিটি যতো শক্তিশালী হতে ফসিল ফুয়েলে বিনিয়োগকারীরা দৃঢ় হবে। ইসিটি ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে, এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ব্যাহত ও অসমতার শিকার হবে। আমরা ইসিটিতে স্বাক্ষর না করার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে গণস্বাক্ষরসহ আবেদন জমা দিয়েছি।

বাংলাদেশের রেগুলেটি বডির অভিজ্ঞতার রেশ টেনে তিনি বলেন, আমার করের টাকায় যার বেতন হয়, সেই আমার কথা শুনতে চায় না। ইসিটিতে মতপার্থক্য হলে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যেতে বলা হয়েছে। সেখানে গেলে কি হবে তা সহজেই অনুমান করা যায়। ব্যক্তি বিশেষ এই আত্মঘাতী সনদে চুক্তির জন্য তৎপর। তারা দায়মুক্তি আইনের মাধ্যমে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠেছে। দায়মুক্তি আইন হয়তো এক সময় থাকবে, সে কথা মাথায় রেখে ইসিটির জন্য তৎপর হয়েছে। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে পরকাল পর্যন্ত রক্ষা পাবে। রফতানি আয়ের টাকা বাংলাদেশে না এসে এফডিআই হয়ে ফিরে এসেছে। এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কিছু হতে পারে না।

তিনি বলেন, সমবেত মানুষ হবে না। ছাত্ররা কোনো দাবি নিয়ে রাস্তায় নামলে পরাজিত হয় না। কোনো ছাত্র আন্দোলন কখনও পরাজিত হয়নি। আমরা এশিয়া এনার্জির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সফল হয়েছি। ভোক্তা শুধু পণ্য কেনে না, তারা চিকিৎসা সেবা, শিক্ষাসহ অনেক কিছুই কেনেন। এখানে বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।